পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের তীর বিজি প্রেসের দিকে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত প্রশাসনিক কমিটির সদস্যরা। এ প্রতিষ্ঠানকে নতুনভাবে সংস্কারের সুপারিশের প্রস্তাব দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁসের প্রেক্ষিতে গঠিত এ কমিটির তৃতীয় দফার বৈঠক শেষে একাধিক সদস্য এমন মন্তব্য করেন।
Advertisement
কমিটির প্রধান ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ জাগো নিউজকে বলেন, রোববার আমাদের তৃতীয়বারের মতো বৈঠক হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও বিজি প্রেস পরিদর্শন করে যেসব ক্রটি ধরা পড়েছে তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে যেসব সমস্যা ধরা পড়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সার্বিক প্রচেষ্টা করছি যাতে প্রশ্ন ফাঁসের প্রধান জায়গাগুলো শনাক্ত করা যায়। এসব বিষয়ের উপর মূল্যায়ন করে আমরা কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরে যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। সেসব বিবেচনা করে তা বাস্তবায়ন করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
প্রশ্ন ফাঁসের প্রধান কেন্দ্র বিজি প্রেস হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করতে এ প্রতিষ্ঠানের ২৫০ জনের মতো মানুষ কাজ করেন। এটি একটি বড় সমস্যা হিসেবে আমাদের কাছে চিহ্নিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় এমন গোপন কাজগুলো দীর্ঘ সময় ধরে বিজি প্রেসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নাড়াচাড়া করে থাকেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিচারপতি, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য হয়েও ঘুষ আদায় ও নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সেখানে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়ম করবে না কেন? প্রশ্ন ফাঁসের জন্য অভিভাবকদের দোষ দেয়া হচ্ছে। কেউ প্রশ্নপত্র হাতে পেলে আরেকজন তা পাওয়ার চেষ্টা করতেই পারে। জিপিএ-৫ পাওয়ার আশায় অর্থ দিয়েও অনেক অভিভাবক সন্তানদের মঙ্গলের কথা ভেবে পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন সংগ্রহ করছেন। আগেই যদি প্রশ্ন পাওয়া যায় তবে কেন তারা তা সংগ্রহ করবেন না। তার আশপাশের অনেকে তা করছেন, তিনি কেন করবেন না প্রশ্ন তোলেন তিনি।
কায়কোবাদ বলেন, সন্তান ভালো ফলাফল না করলেও ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে না। সে কারণে অভিভাবকদের দোষারোপ করে লাভ নাই। অযাচিতভাবে এটি ঘটে যাচ্ছে বরং কেউ যাতে প্রশ্ন ফাঁস করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ২৭ মার্চ এ কমিটি শেষ বৈঠকে বসবেন। কার্যকরী পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে হবে। আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যেই এ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেবেন বলেও জানান তিনি।
Advertisement
উল্লেখ্য, চলতি শিক্ষাবর্ষের এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। ১২টি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁস হয় বলে অভিযোগ আছে। এরপর উচ্চ আদালতে এক রিটের প্রেক্ষিতে দুটি কমিটি গঠন করা হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিচারিক এবং প্রশাসনিক নামে এ দুটি কমিটি গঠিত হয়।
এমএইচএম/ওআর/জেআইএম