মাশরাফিতো ঔষধ বাতলে দিয়েছিলেন। প্রেসকিপশনে লিখে দিয়েছিলেন, ভারতের বোলিং মূলতঃ দুই স্পিনার ইয়ুজবেন্দ্র চাহাল আর ওয়াশিংটন সুন্দর কেন্দ্রিক। তারা দু'জনই মূল বোলার। অফ স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর আর লেগি চাহালই ভারতের বোলিংয়ের ট্রাম্পকার্ড। ব্যাটিংয়ে ভাল করতে হলে, ওই দুই কোয়ালিটি স্পিনারকে দেখে খেলার ওপর জোর তাগিদ দিয়ে মাশরাফি বলেছিলেন, ব্যাটিংয়ে ভাল করতে হলে অবশ্যই চাহাল আর ওয়াশিংটনকে ঠিকমত সামলাতে হবে, ঠিকভাবে খেলতে হবে।’
Advertisement
মাশরাফির শেষ কথা ছিল, ওই দুই স্পিনারকে আমাদের ব্যাটসম্যানরা কেমন সামলায় ও কিভাবে মোকাবিলা করে সেটাই দেখার। সেটাই ফলের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।’ একদম ঠিক কথা। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ওপর ঠিকই প্রভাব ফেলেছেন চাহাল ও ওয়াশিংটন সুন্দর। তাদের স্পিন ভেলকির মুখেই আসলে ভেঙ্গেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং মেরুদণ্ড।
রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে লিটন, সৌম্য ও তামিম ইকবালকে আউট করে নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। আজও এ অফ স্পিনারে ভেঙেছে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। তার বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে আকাশে ক্যাচ তুলে ফেরত গেছেন লিটন দাস।
দুই ওভারের প্রথম স্পেলে এক উইকেট পাওয়া এ অফ স্পিনার পরের দুই স্পেলে উইকেট না পেলেও রান লাগাম টেনে রাখলেন। তবে আসল কাজ করে দিলেন লেগ স্পিনার ইয়ুজবেন্দ্র চাহাল। ৪ ওভারের টানা স্পেলে তার বলে আউট হলেন তামিম, সৌম্য আর মুশফিকুর রহীম।
Advertisement
চাহাল বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন তামিম ইকবালকে। পাওয়ার প্লে'র তখন পঞ্চম ওভার, এমন সময় লেগ স্পিনারকে বোলিংয়ে দেখেই তামিমের মনে হলো বিগ হিট নিতেই হবে। এক পা সামনে বেরিয়ে তুলে মারলেন; কিন্তু ঠিক বলের পিছনে শরীর ও ডান পা না যাওয়ায়, বল ঠিক মাঝ ব্যাটের বদলে একটু ওপরের দিকে লেগে আকাশে উঠে গেল।
তারপরও লং অফ বাউন্ডারির ওপর অসাধারণ দক্ষতায় জিমন্যাস্টদের মত শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে ক্যাচ ধরে ফেললেন শার্দুল ঠাকুর। তামিম ১৩ বলে ১৫ রানে আউট হবার তিন বল পর আউট সৌম্য সরকার (দুই বলে এক)। ফুল লেন্থ ডেলিভারিকে সুইপ খেলতে গিয়ে স্কোয়ার লেগে ক্যাচ তুলে বিদায় নিলেন সৌম্য।
সেখানেই থেমেছিলেন না চাহাল। এবারের নিদাহাস ট্রফিতে যার ব্যাট থেকে এসেছে সেরা সার্ভিস, সেই মুশফিকও চাহালের কিছুটা ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে কভারের ওপর দিয়ে চালাতে যেয়ে সেখানেই ক্যাচ তুলে দেন (১২ বলে ৯)। ১১ নম্বর ওভারে ৬৮ রানে প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যান আউট হবার পরই বড়-সড় পুঁজি গড়ার পথ থেকে সরে যায় বাংলাদেশ।
এরপর সাব্বির রহমান (৫০ বলে ৭৭) আর মেহেদি হাসান মিরাজের (৭ বলে ১৯*) দৃঢ়তায় ১৬৬ পর্যন্ত গেলো বাংলাদেশ। শেষ দিকে পেসার জয়দেব উনাদকট এক ওভারে সাব্বির ও রুবেলকে আউট করে রান কমিয়ে দিলেও আসল কাজের কাজ করে দেন সেই চাহাল (৪ ওভারে ১৮ রানে ৩ উইকেট) আর ওয়াশিংটন সুন্দর (৪ ওভারে ২০ রানে ১ উইকেট)। দুই স্পিনার ৮ ওভারে ওভারপিছু পাঁচ রানেরও কম (৪.৮ করে) দিয়ে ৪ উইকেটের পতন ঘটিয়েই সর্বনাশ ডেকে আনেন।
Advertisement
এআরবি/আইএইচএস/জেএইচ