আইন-আদালত

আমরা মামলাটি একটু ভালো করে শুনি : প্রধান বিচারপতি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্র ও দুদকের করা আপিল শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আমরা মামলাটি একটু ভালো করে শুনি।

Advertisement

রোববার এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্র ও দুদকের করা আপিল শুনানির সময় খালেদার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা মামলাটি একটু ভালো করে শুনি। আপনারাই বলেছেন, আমরা গতদিন শুনি নাই। আমরা আপনাদের কথা পরে শুনবো।

শুনানির এক পর্যায়ে অ্যাটির্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আমি সারসংক্ষেপ বলতে চাই। তিনি মামলার বিস্তারিত পড়া শুরু করলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আপত্তি তুলে বলেন, এখনতো আপিলের শুনানি হচ্ছে না। মামলার সারবত্তায় (মেরিট) যাওয়ার দরকার কী?

Advertisement

এ পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা হলো একটা সারসংক্ষেপ। বিচারিক আদালতের রায়ে একজন সাক্ষীর মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, এতিমখানার টাকা উত্তোলনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার অনুমোদন ছিল। এর মধ্যে তারেক রহমান ও তার ভাগ্নে মুমিনুর রহমান চার লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। তারা কীভাবে এ টাকা তুলে নিলেন?

আদালত বলেন, এটা কি ব্যক্তি নামে ছিল? অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হ্যাঁ ব্যক্তি নামে ছিল। এফডিআর করা নিয়ে একটা মামলাও হয়। কীভাবে বিদেশ থেকে টাকা এলো, কীভাবে এফডিআর হলো। তারা জমি কেনার জন্য টাকা দিয়েছিল কিন্ত যখন জমি পাচ্ছিল না তখন তারা জমির জন্য চাপ না দিয়ে টাকা ফেরত চেয়েছে।

আদালত জানতে চান মামলাটি কখন হয়েছিল? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ২০০৯ সালে হয়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মামলার ধারাবাহিক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, বিচার বিলম্বিত করতে তারা এমন কোনো পথ নেই যে অবলম্বন করেননি। এ মামলা যেন বাস্তবে না আসে সে জন্য তারা বেশ কয়েকবার উচ্চ আদালতে বিভিন্ন অজুহাতে আসেন। এটা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও গড়ায়। এ হলো তাদের আচরণ।

মামলার নথি দেখে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার অজ্ঞাতে টাকা এসেছে বা তোলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না- এটা ঠিক না।

Advertisement

তিনি হাইকোর্টের চারটি যুক্তির পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, তাকে স্বল্প মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। আর আপিল শুনানি হবে না এটা অযৌক্তিক। আমাদের এ কোর্টে বিডিআর মামলায় ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। আমরা হাজার হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক তৈরি করেছি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক দুটি লিভ টু আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার আদেশ দেয়ার জন্য রখেছেন। রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এফএইচ/বিএ/আরআইপি