আন্তর্জাতিক

‘মালদ্বীপে হস্তক্ষেপ করছে চীন’

চীনের বিরুদ্ধে মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ এবং ভূমি দখলের মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছেন দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা আহমেদ নাসিম। তিনি বলেছেন, চীনের এ পদক্ষেপ পুরো ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের জন্য বড় ধরনের হুমকি তৈরি করেছে।

Advertisement

দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও চীনের হস্তক্ষেপের ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানাতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন আহমেদ নাসিম। তিনি বলেছেন, বর্তমানে মালদ্বীপে পুরোমাত্রার একনায়কতন্ত্র চলছে।

বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ থিংক ট্যাঙ্কদের এক অনুষ্ঠানে আহমেদ নাসিম বলেন, ‘এশিয়ার দেশগুলোতে অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে পশ্চিমা বিশ্বকে হস্তক্ষেপ না করতে বলে চীন। কিন্তু মালদ্বীপে বিরোধীদের দমনে ক্ষমতাসীন অভিজাত ও স্বৈরাচারীদের উৎসাহিত করে আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপে চীন খুব সুখ অনুভব করে।’

ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে মালদ্বীপের রাজনৈতিক অঙ্গন হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বিরোধীদলীয় ৯ নেতাকে একটি মামলা থেকে খালাস দেয়ার পর তাদেরকে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে ইয়ামিনের দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া ১২ সংসদ সদস্যকে তাদের পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দেয়া হয়।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের এ আদেশের ফলে ৮৫ আসনবিশিষ্ট মালদ্বীপের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় বিরোধীরা। অভিশংসনের শঙ্কায় সুপ্রিম কোর্টের দেয়া আদেশ সরকার বাস্তবায়ন করবে না জানিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সংসদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লা ইয়ামিন।

ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য শুরু হয় কঠিন এক ঝড়। এর জেরে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট। পরে ২০ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরো ১০দিন বাড়ানো হয়। মালদ্বীপ সরকারের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা আহমেদ নাসিম বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের যেসব গণতান্ত্রিক অর্জন ছিল ২০১৩ সালে ক্ষমতা নেয়ার পর তার সবকিছুই ধ্বংস করেছেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। বিরোধীদলীয় প্রত্যেক নেতা হয় জেলে নতুবা নির্বাসনে। সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে এবং এখন পার্লামেন্টের দখল নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বেইজিং স্বৈরশাসন পছন্দ করে। কারণ স্বৈরশাসকরা সহজেই লুটপাট করতে পারে। স্বৈরশাসকরা সহজেই চীনের ঋণের ফাঁদে পড়ছে।’

Advertisement

‘এটি অর্জনে চীনের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে ভূমি দখল। আরো নির্দিষ্ট করে বললে, মালদ্বীপে একটি ঘাঁটি নির্মাণ করতে চায় চীন; যা একসময় যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনের আস্তানা হতে পারে।’

নাসিম বলেন, ভূমি দখলে চীনের প্রেসক্রিপশন পরিবর্তন হয়েছে- গণতন্ত্র এবং স্বচ্ছতা গুঁড়িয়ে দিয়ে স্বৈরতন্ত্র ফিরে আনা। অবকাঠামো প্রকল্প পেতে যে এলাকায় রাস্তা বা সেতু নেই সেসব এলাকায় রাস্তা বা সেতু তৈরি করছে চীন।

সূত্র : পিটিআই।

এসআইএস/পিআর