সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে অবাধে চলছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। এর ফলে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনার কারণে মহাসড়কে ক্রমেই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নজদারি না থাকায় এখনো পর্যন্ত মহাসড়কে দাবড়ে বেড়াচ্ছে প্রাণঘাতী এসব সিএনজি চালিত অটোরিক্শা।জানা যায়, গত ১ জুলাই বুধবার সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মালিহাতা নামক স্থানে যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যন ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার ত্রিমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন।এরপর গত ১৫ জুলাই বুধবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে জেলার বিজয়নগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শশই নামক স্থানে মালবাহী পিকআপ ভ্যান ও যাত্রীবাহী সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার চার যাত্রী এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর পিকআপ ভ্যানের আরেক যাত্রী মারা যান।পরদিন ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলার আখাউড়া উপজেলার আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের নূরপুর ও নারায়ণপুরের মধ্যবর্তী স্থানে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় যাত্রীবাহী সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার তিন যাত্রী মারা যান।সর্বশেষ গত ২৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে জেলার সরাইল উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইসলামাবাদ নামক স্থানে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় দুই অটোরিকশা যাত্রী নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক পরিবহন কর্তৃক্ষ (বিএরটিএ) সূত্র জানিয়েছে, জেলার সড়ক-মহাসড়কগুলোতে চলাচলকারী শতকারা ৬০ ভাগ সিএনজি চালিত অটোরিকশারই কোনো নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন নেই। অনুমোদিত পাঁচ হাজার অটোরিকশার বাইরে সড়ক-মহাসড়কে অবৈধভাবে চলাচল করছে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার অটোরিকশা।শুক্রবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেশ কয়েকটি অংশে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে অবৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা। অনেক অটোরিকশা চালকই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নিষেধাজ্ঞার কথা জানেন না।তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অটোরিকশা চালক জাগো নিউজকে জানান, হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়েই মহাসড়কে তারা অটোরিকশা চালাচ্ছেন।মহাসড়কের আশপাশের এলাকার লোকজন জাগো নিউজকে জানান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনদের সিএনজি চালিত অটোরিকশা কেন্দ্রিক অবৈধ ঘুষ বাণিজ্যের কারণে মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। তাই জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।তবে হাইওয়ে পুলিশকে টাকা দিয়ে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করে হাটিহাতা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি আদেশ পাওয়ার পর থেকেই মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেগুলো চলাচল করছে সেগুলোকে মুচলেকার বিনিময়ে এবং মহাসড়কে আর না ওঠার শর্তে ছাড়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যেন না চলাচল করতে পারে সেজন্য আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।এমজেড/আরআইপি
Advertisement