খেলাধুলা

সাকিবে উজ্জীবিত বাংলাদেশ

এ যেন ফাইনাল। যে হারবে তারই বিদায়। জয়ী দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতের। এমন ম্যাচকে ফাইনাল না বলে তো উপায় নেই। নিশ্চিত, ফাইনালের মত করেই প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা।

Advertisement

এমন প্রস্তুতিতে হঠাৎই বাংলাদেশ শিবিরে চাঞ্চল্য। পুরো দলই বলতে গেলে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে একটি সংবাদে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ফিরে আসছেন দলে। হঠাৎ করেই সাকিব সিদ্ধান্ত নিলেন যোগ দেবেন দলের সঙ্গে। আঙ্গুলের যে ইনজুরি এতদিন ভুগিয়েছে তাকে, অবশেষে সেটা থেকে মুক্তি মিলেছে তার। অস্ট্রেলিয়া থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে দু’দিন অনুশীলন করেছেন মিরপুর অ্যাকাডেমি মাঠ, ইনডোর এবং জিমনেশিয়ামে। এরপরই তিনি জানিয়ে দিলেন নিদাহাস ট্রফিতে খেলবেন।

বিসিবিও জানিয়ে দিলো, সাকিবকে দলের সঙ্গে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। তিনি আজই (বৃহস্পতিবার) কলম্বোর উদ্দেশ্যে বিমানে উঠবেন। শেষে জানা গেলো, সন্ধ্যার আগেই কলম্বো পৌঁছে যান বাংলাদেশ দলের এই তারকা। সাকিব ফেরায় দলের মধ্যে নিশ্চিত একটা ফুরফুরে আবহ তৈরি হয়েছে। শুধু অধিনায়ক হিসেবেই নয়, দলের একজন সেরা তারকাকেই তো কাছে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। যিনি ব্যাট এবং বল হাতে একাই দু’জনের পারফরম্যান্স উপহার দিতে পারবেন।

নিদাহাস ট্রফিতে যেখানে টপ ফেবারিটের তালিকায় ছিল শ্রীলঙ্কা। বিশেষ করে, প্রথম ম্যাচে ভারতকে হারানোর পর লঙ্কানদেরই অপ্রতিরোধ্য ভেবেছিল সবাই; কিন্তু বাংলাদেশের সামনে এসে এভাবে অবিশ্বাস্য পরাজয় ঘটবে, তা খোদ লঙ্কানরা ক্রিকেটাররাও ভাবতে পারেননি। ২১৫ রানের বিশাল স্কোর তাড়া করতে পারবে না বাংলাদেশ- এমন চিন্তা ভাবনাই ছিল লঙ্কানদের মাথায়। কিন্তু টাইগাররা সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলার পরই হিসাব-নিকাশের আড়ালে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। শুধু তাই নয়, ভারতের কাছে ফিরতি পর্বের ম্যাচে হারের কারণে আরও বিপদে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

Advertisement

এ কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার এই ম্যাচটি শুধু ফাইনালে ওঠার ম্যাচই নয়, প্রতিশোধেরও। বাংলাদেশের জন্যও প্রতিশোধের। কারণ, লঙ্কানরা ঘরের মাঠে যেভাবে টাইগারদের নাস্তানাবুদ করেছে, তাতে ওই ২১৫ রান তাড়া করে এক জয়ে সে ক্ষত শেষ হয়ে যাওয়ার কথা নয়। লঙ্কানদের ফাইনাল থেকে দুরে রাখতে পারলেই কেবল, বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের স্বস্তি মিলবে, নচেত নয়।

এমন একটি ম্যাচে বাংলাদেশ দলে সাকিব আল হাসানের ফিরে আসাটা সত্যিই দারুণ এক উজ্জীবনি শক্তি। একা এক সাকিবই বিশাল পার্থক্য তৈরি করে দিতে সক্ষম যে কোনো ম্যাটে। টি-টোয়েন্টি হলে তো কথাই নেই। আইপিএল, বিপিএল থেকে শুরু করে পৃথিবীর তাবৎ ফ্রাঞ্চাইজি লিগ কাঁপানো সাকিব তো টি-টোয়েন্টিতে আরও বড় প্রভাব তৈরি করবেন, সেটা জানা কথাই।

সাকিব ফিরলেও বাংলাদেশের বোলারদের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে এই ম্যাচে। স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা রয়েছেন দারুণ ফর্মে। বিশেষ করে কুশল মেন্ডিস। একাই তিনি পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন। সঙ্গে কুশল পেরেরা, উপুল থারাঙ্গা, গুনাথিলাকাও রয়েছেন দারুণ ব্যাটিং ফর্মে। এরা যে কোনো বড় স্কোর দাঁড় করিয়ে দিতে সক্ষম বাংলাদেশের সামনে। কিংবা বড় স্কোরও তাড়া করতে সক্ষম। অন্তত আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা সে প্রমাণ রেখেছেন।

যদিও সাকিব ফেরায় বাংলাদেশের বোলিং শক্তিতে দারুণ একটি ভারসাম্য আসবে। সাকিব একাদশে থাকলে মেহেদী হাসান মিরাজেরই কপাল পোড়ার কথা। তাকেই হয়তো বাদ দেয়া হতে পারে। অন্য স্পিনার নাজমুল অপু কিন্তু প্রথম ম্যাচ থেকেই রয়েছেন দারুণ ছন্দে। তাকে একাদশের বাইরে রাখার সম্ভাবনা খুবই কম। যদিও কেউ কেউ মনে করছেন, সাকিব আর নাজমুল অপু যেহেতু একই ধরনের বোলার, সে ক্ষেত্রে নাজমুল অপুকেই দলের বাইরে রাখা হতে পারে।

Advertisement

তবে ভিন্ন কথাও শোনা যাচ্ছে। সাকিব শ্রীলঙ্কায় গেলেও লঙ্কানদের বিপক্ষে এই ম্যাচে নাও খেলতে পারেন। হয়তো বা দলের অন্য সদস্যদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। হয়তো বা লঙ্কানদের পরিকল্পনায় ভিন্নতা আনতেই তাকে কলম্বোয় উড়িয়ে নেয়া। তবে, সবই পরিস্কার হয়ে যাবে শুক্রবার সন্ধ্যায় দল ঘোষণা করা হলে।

আইএইচএস/এমএস