দেশজুড়ে

পৃথুলা ফিরবে, অপেক্ষায় ছিল ইলমা ও জান্নাতি

গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আম খাওয়া হলো না তার। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্বজনরা। এলাকায় চলছে শোকের মাতম।

Advertisement

মার্চের শেষের দিকে ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল তার। আর আসা হলো না। খবর আসে লাশের। তার স্মৃতি আবেগতাড়িত করছে পরিবারের সদস্যদের। জাতীয় সম্পদ হারালো তারা। এ ক্ষতি পূরণ হবার নয়। এসব কথা বলে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের পাইলট পৃথুলা রশীদের বাবা-মা।

বাবা কাজল হোসেন ও মা রাফেজা বেগমের একমাত্র সন্তান পৃথুলা রশিদ (২৬)। ফুটফুটে হাস্যোজ্জ্বল মেধাবী এ তরুণী নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়। পৃথুলা রশিদের পিতৃভূমি যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ার দক্ষিণের ছোট গ্রাম ইলিশপুরে।

পৃথুলার চাচা কামাল হোসেন ও সহিদুল আলাল বলেন, কোটি টাকা খরচ করে গড়ে তোলা জাতীয় সম্পদে রূপ নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না। চলে গেল পরপারে। সবার কাছে দোয়া চাই, যেন ওপারে সে ভালো থাকে।

Advertisement

পৃথুলার চাচি বলেন, এ মাসে গ্রামের বাড়িতে আম খেতে আসার কথা ছিল তার। আর আসা হলো না। ছুটিতে এসে ঘুরে বেড়াবে স্বজনদের বাড়িতে। পৃথুলা ফিরে আসবে গ্রামের বাড়িতে অপেক্ষায় ছিল এক সময়ের খেলার সাথী চাচাতো বোনেরা। এছাড়া এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বোনের জন্য অপেক্ষায় ছিল চাচাতো বোন উম্মে ইলমা ও উম্মে জান্নাতি। কিন্তু আর ফিরে আসবে না কোনোদিন। পৃথুলা চলে গেছে পরপারে।

নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৫১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে পাইলট, ক্রুসহ বাংলাদেশি ৩৬ জনের মধ্যে ২৬ জন মারা গেছেন।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিধ্বস্ত বিমান থেকে ১০ জনকে উদ্ধার করে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন বিমানের কো-পাইলট পৃথুলা রশীদ।

বিমান বিধ্বস্তের পরপরই নেপালের ফেসবুক গ্রুপ সিকিম মেসেঞ্জার জানায়, নিজের জীবনের বিনিময়ে এ বীর নারী পাইলট বাঁচিয়ে গেছেন ১০ নেপালি যাত্রীর প্রাণ।

Advertisement

এ ঘটনায় পৃথুলা রশীদের প্রশংসা করে তাকে ডটার অব বাংলাদেশ আখ্যা দিয়ে তার প্রতি শুদ্ধা জানায় সংবাদমাধ্যমটি। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যামগুলোতেও তার প্রশংসা করা হয়। ইউএস-বাংলার প্রথম নারী পাইলট পৃথুলা রশীদ নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন।

মো. জামাল হোসেন/এএম/জেআইএম