কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন ইউএস-বাংলার জিএম (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) কামরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইউএস-বাংলার বারিধারা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
Advertisement
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে অনেক সময় অনেকেই নানা বিভ্রান্তিমূলক কথা বলছেন। ধারণার ওপর ভিত্তি করে কোনো মন্তব্য করে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করবেন না। কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি আমাদের পাইলট, এয়ারক্রাফটের কোনো প্রবলেম ছিল না। গতকাল (বুধবার) নেপাল সিভিল এভিয়েশনের মহাপরিচালকও বক্তব্য দিয়েছেন যে -ইউএস-বাংলার কোনো সমস্যা ছিল না। এছাড়া বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানও গতকাল (বুধবার) সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, পাইলট, এয়ারক্রাফটের কোনো প্রবলেম ছিল না।’
যেহেতু এটা একটি তদন্তাধীন বিষয় তাই আমরা তদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত এটির সঠিক তথ্যের জন্য অপেক্ষা করব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইউএস-বাংলার এই জিএম বলেন, যেহুতু এটি একটি দুর্ঘটনা। তাই যাত্রীদের বলতে চাই- ঘটে যাওয়া এই ঘটনা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। বাংলাদেশি এয়ারলাইন্স সেবার ওপর বিশ্বাস-আস্থা রাখুন। যেহেতু এটি একটি দুর্ঘটনা তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
Advertisement
তিনি বলেন, বিমান দুর্ঘটনায় আহত শেহরিন আহমেদকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে আমাদের তত্ত্বাবধানে দেশে আনা হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিকেলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হবে। এছাড়া আহত আরেকজন ডা. রেজুয়ানুল হককে গতকাল (বুধবার) এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখানে তার দুজন আত্মীয়ের থাকা, আহতের চিকিৎসাসহ যাবতীয় বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।
ইতোমধ্যে চিকিৎসকদের একটি টিম নেপাল গেছেন, তারা পর্যবেক্ষণ করে আমাদের যেমন নির্দেশনা দেবেন আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নেব বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, নেপাল রুটে আমাদের ফ্লাইট সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদি নয়, পরবর্তীতে আবার রি-শিডিউল করা হবে। অন্যদিকে এয়ারক্রাফট, যাত্রী, কেবিন ক্রু সবারই ইন্সুরেন্স করা আছে দেশি এবং বিদেশি দুটি প্রতিষ্ঠানে। তবে বর্তমানে আমাদের নিজস্ব খরচেই সবকিছু বহন করছি।
গত সোমবার (১২ মার্চ) ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস ২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুর্ঘটনায় পতিত হয়। বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ারের দেয়া ভুল অবতরণ বার্তার জেরে আকাশে অপেক্ষা করতে থাকে বিমানটি। পরে ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হন। আর ১০ বাংলাদেশি আহত হন। তাদের নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের চারজনকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে অনাপত্তি দিয়েছে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ (কেএমসি)। তারা হলেন- মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা, আলমুন নাহার এনি ও শেহরিন আহমেদ।
Advertisement
এএস/জেডএ/আরআইপি