মতামত

সর্বোচ্চ শাস্তিই কাম্য

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যা মামলায় ৩৯ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আলোচিত এই মামলায় একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ মামলার প্রধান আসামি স্থানীয় বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন আহমদ চৌধুরী মিনার ও যুবলীগ নেতা জিয়াউল আলম মিস্টারসহ ১৬ জন খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফেনীর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনুল হক এ রায় দেন। হত্যাকারীরা যে নির্মম পৈশাচিকতা ও জিঘাংসার প্রকাশ ঘটান এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই ছিল কাম্য। সমাজে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এ রায় ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

Advertisement

এ সংক্রান্ত সংবাদ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনীর বিলাসী সিনেমা হলের সামনে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি একরামুল হককে প্রকাশ্যে গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়িসহ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রেজাউল হক জসিম বাদী হয়ে বিএনপি নেতা মাহাতাব উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ২৮ আগস্ট ৫৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। হত্যার প্রায় দুই বছর পর ২০১৬ এর ১৫ মার্চ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করে আদালত। এ বছরের ২৮ জানুয়ারি এ মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হয়। এ মামলায় বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ৪৪ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ১৫ জন। এছাড়া মামলার এজাহারভুক্ত ৫৬ আসামির মধ্যে বর্তমানে ১৪ জন কারাগারে, ২৩ জন জামিনে ও ৯ জন জামিনে গিয়ে পলাতক ও ১০ জন ঘটনার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া র‌্যাবের ক্রসফায়ারে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

সাধারণত রাজনৈতিক মোড়কে কোনো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলে তার বিচার পাওয়া নানা কারণেই কঠিন হয়ে পড়ে। সেদিক থেকে এই রায় আশাব্যঞ্জক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এই রায় ভূমিকা রাখবে এমনটি আশা করি। সমাজে অপরাধের শাস্তি না হলে তা আরো বেড়ে যায়। এ কারণে অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এটা হলে অপরাধ কমাতে তা ভূমিকা রাখে। এখন দণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা যেন কার্যকর হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এছাড়া আইনি অনেক ধাপ এখনো বাকি আছে। সেখানেও যেন অপরাধীর যথাযথ শাস্তি হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীর পরিচয় যাই হোক এবং সমাজে তার যতই প্রভাবপ্রতিপত্তি থাকুক-অপরাধ করলে যে পার পাওয়া যায় না এই ধারণা পোক্ত করাই এই মুহূর্তের কর্তব্য।

এইচআর/আরআইপি

Advertisement