জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন রোববার (১৮ মার্চ) পর্যন্ত স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ।
Advertisement
আদালতের এই আদেশে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমি হ্যাপি।’ অপরদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘এই আদেশে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত।’
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় সর্বোচ্চ ওপরে ছিল দুদকের জামিন স্থগিতের আবেদনটি। মাননীয় প্রধান বিচারপতি আমাদের প্রার্থনার পর এ মামলাটি আগামী রোববারের মধ্যে লিভ পিটিশন (আপিল অনুমতির আবেদন) দাখিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার পর্যন্ত হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত থাকবে। ইনশাআল্লাহ আজকে দুপুরের মধ্যে যদি আমরা সার্টিফাইড কপি পেয়ে যাই তাহলে আজ না করতে পারলেও আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরের মধ্যে লিভ টু আপিল দাখিল করতে পারব।’
এক প্রশ্নের জবাবে খুরশীদ আলম বলেন, ‘আদালতে বলেছি, উনার (খালেদা জিয়ার) পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশন চারটি গ্রাউন্ডে উনাকে জামিন দিয়েছেন। আমি আপিল বিভাগে নজির দেখিয়েছি। আপিল বিভাগের জাজমেন্ট এখনও রিভার্স হয়নি। রিভার্স যদি না হয়ে থাকে ‘ইট ইজ বাউন্ডিং আপ দ্য হাইকোর্ট ডিভিশন’। কিন্তু হাইকোর্ট ডিভিশন এ ব্যাপারে কিছুই বলেননি। কাজেই আমি মনে করি এ মেটারগুলো এক্সামিন করা উচিত।’
Advertisement
আদালতে আজ বিএনপির আইনজীবীদের কথাই বলতে দেয়া হয়নি, এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘সেটা আমি জানি না। সেটা উনাদের অ্যালিগেশন। পলিটিক্যাল কোনো প্রশ্ন আমাকে করা ঠিক হবে না।’
কী কারণে রোববার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে জানতে চাইলে দুদকের এই আইনজীবী বলেন, ‘স্থগিতের কখনও রিজন দেয়া হয় না। চেম্বার জজ বলেন, ফুলকোর্ট বলেন যখন স্টে দেয়া হয় তখন কোনো রিজন দেয়া হয় না। আদালতের এ আদেশে আমি হ্যাপি। হ্যা আমরা আজকের আদেশে হ্যাপি।’
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘আমাদের বক্তব্য না শুনে দেশের সর্বোচ্চ আদালত খালেদা জিয়ার জামিন রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন। আদালতের এই আদেশে আমরা ব্যথিত। এই আদালতের আদেশের বিষয়ে কী ভাষায় আপনাদের কাছে বর্ণনা করব, তা আমরা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।’
Advertisement
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সভাপতি কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে এক প্রতিক্রিয়াই সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা ধারণা করেছিলাম, চিরাচরিতভাবে আপিল বিভাগ যেটা করেন, উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনেন, তারপর আদেশ দেন। আজকের বিষয়টি হলো, আপিলটি দুদকের আইনজীবী উপস্থাপন করার সঙ্গে সঙ্গে বললেন (আদালত) যে আগামী রোববার সিপি (লিভ টু আপিল বা আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ফাইল করেন। জামিন আগামী রোববার পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।’
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, ‘আমাদের কোনো বক্তব্য তিনি (প্রধান বিচারপতি) শুনলেন না। আইনগতভাবে এই মামলাটি মোকাবেলা করার জন্য ন্যূনতম সুযোগ আমাদের দিলেন না। না দিয়ে স্টে অর্ডার অনুমোদন করলেন। আমরা এই আদেশে অত্যন্ত ব্যথিত।’
এফএইচ/জেডএ/আরআইপি