দেশজুড়ে

নবগঙ্গার ভাঙনের কবলে দেড়শো বছরের পুরানো নোয়াগ্রাম বাজার

নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর ভাঙনের কবলের মুখে দেড়শো বছরের পুরানো কালিয়া উপজেলার নোয়াগ্রাম বাজার। মাত্র ৩০০ ফুট নদী তীর বাঁধ দিলেই নবগঙ্গা নদীর ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে দেড়শো বছরের পুরানো নোয়াগ্রাম বাজারটি। নদীর প্রবল স্রোতে ইতোমধ্যে দশটি দোকান ও কয়েকটি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আরো ২০টি দোকান, মসজিদসহ নোয়াগ্রাম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন ও খেলার মাঠ।  নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুনার রশীদ জাগো নিউজকে জানন,বাজারটি রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসক,পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আস্তে আস্তে বাজারটি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, নবগঙ্গা নদীটি লোহাগড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া নৌবন্দর হয়ে খুলনার ভৈরব নদীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এক সময়ে এই নদীতে লঞ্চ, স্টিমারসহ বড় বড় জাহাজ চলাচল করায় নদী তীরবর্তী ঘন জনবসতি এলাকা গড়ে ওঠে একাধিক হাট-বাজার গঞ্জ। নোয়াগ্রাম বাজার তার একটি অংশ। বাজার ঘিরে গড়ে উঠেছে মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ খেলার মাঠ। বাজারের ব্যবসায়ী সমশের আলী জাগো নিউজকে জানান, ইদ্রিস মোল্লা, রহিম শেখ, আলীম মোল্লা, হারুন মোল্লা, সুজল বিশ্বাস, একলিম মিয়ার দোকানসহ দশটি দোকার নদীতে বিলীন হয়েছে। আরো পনের থেকে বিশটি দোকান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।  স্থানীয় মুরুব্বী জামশেদ শেখ জাগো নিউজকে জানান, নোয়াগ্রাম বাজার ১৫০ বছরের পুরানো। এই নদীতে যখন লঞ্চ, স্টিমার ও বড় বড় জাহাজ চলেছে তখন বাজারটি ছিল জমজমাট। এখন মৃত প্রায়। যাও বা ছিল তা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। রক্ষা করার কেউ নেই।নোয়াগ্রাম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল আলম জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের বেশিরভাগ অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। বিদ্যালয় ভবনটিও বিলীন হওয়ার পথে।  বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা গোলাম মাওলা জাগো নিউজকে বলেন, নদী ভাঙন রক্ষা করা না গেলে বাজারসহ মসজিদ, মন্দির, বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হবে। এখানকার মানুষ শিক্ষা-দীক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জিয়ার মোল্লা জাগো নিউজকে জানান, বাজারটির অস্তিত্ব একেবারে বিলীন হলে এখানকার মানুষ আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুনার রশীদ জাগো নিউজকে জানান, মাত্র ৩০০ ফুট নদীর তীর বাঁধ দেওয়া গেলে ভাঙনের হাত থেকে বাজার, বিদ্যালয়, মসজিদ-মন্দিরসহ একমাত্র খেলার মাঠটি রক্ষা পেত। তিনি আরো জানান, ভাঙন রক্ষার জন্য অনেকের কাছে ধর্না দিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, নোয়াগ্রাম নদী তীর সংরক্ষণের জন্য নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হক মুক্তি বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে নদী তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করা যাবে।হাফিজুল নিলু/এমজেড/এমএস

Advertisement