পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ডিভোর্সের তৃতীয় ও শেষ শোনানিতে আজ ১২ মার্চ, সোমবার উপস্থিত হননি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। এই দুই পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবেও কেউ উপস্থিত ছিলেন না। স্বাভাবিকভাবেই আইন অনুযায়ী শাকিবের আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিভোর্স চূড়ান্ত হয়েছে ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই দুই তারকার। এখন থেকে আর স্বামী-স্ত্রী নন শাকিব-অপু।
Advertisement
তবে আইন অনুযায়ী গেল ২২ ফেব্রুয়ারি থেকেই আর স্বামী-স্ত্রী নন তারা। গেল বছরের ২২ নভেম্বর আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে অপু বিশ্বাসকে তালাক নোটিশ পাঠান শাকিব খান। নিয়ম অনুযায়ী ওইদিন থেকে ৩ মাস অর্থাৎ ৯০ দিন সময় ছিল এই তালাক কার্যকর হতে। সেই হিসাবে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পূর্ণ হয়েছিলো ৩ মাস। ফলে তখন থেকেই সাবেক তারকা দম্পতি শাকিব-অপু।
কিন্তু এই তারকা দম্পতির সংসার টিকাতে আপোষের আশায় নতুন আজ ১২ মার্চ শুনানির নতুন তারিখ দিয়েছিলো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। কিন্তু আজও কেউ হাজির হননি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল ৩-এর নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন জাগো নিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘শাকিব-অপুর তৃতীয় ও শেষ শুনানি হয়েছে আজ। দুই পক্ষের কেউই আজ উপস্থিত ছিলেন না। তাই ডিভোর্সের সালিশী প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন থেকেই তারা আর স্বামী-স্ত্রী নন।’
এই কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি নিষ্পত্তির পর তাদের কেউ পারিবারিক আদালতে যাবেন কি না, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। চাইলে তাদের যে কেউ মামলাও করতে পারবেন। আবার চাইলে যে কোনো সময় এসে শাকিব খান বা অপু বিশ্বাস তাদের ডিভোর্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন।
Advertisement
তবে এই তালাক নিয়ে সংশয় এখনো রয়ে গেছে বলে দাবি করলেন হেমায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘অপু বিশ্বাস দাবি করেছেন শাকিবের আবেদনে যে স্বাক্ষর রয়েছে সেটি শাকিবের নয়। স্বাক্ষরটি শাকিবের কী না সেই ব্যাপারে আমরাও নিশ্চিত হতে পারিনি। শাকিব ও তার উকিলকে বেশ কয়েকবার তলব করেও এই ব্যাপারে কোনো সদুত্তর মিলেনি। তাই অপু যদি চ্যালেঞ্জ করেন এবং স্বাক্ষরটি শাকিবের নয় বলে প্রমাণ হয় তবে ডিভোর্সের আবেদনটিই বাতিল হয়ে যাবে। তাছাড়া একটি ডিভোর্স কার্যকর করার জন্য যেসব তথ্য ও প্রমাণ দরকার তার অনেক কিছুই শাকিব খান প্রদান করেননি। এটা নিতান্তই নির্ভর করছে অপু বিশ্বাসের উপর, তিনি সংসার টিকিয়ে রাখতে চ্যালেঞ্জ বা মামলা করবেন কী না। আর যদি মেনে নেন এই আবেদন, তবে ডিভোর্স কার্যকর হয়ে গেছে।’
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন ঢাকাই ছবির এক সময়ের হিট জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় তাদের সন্তান আব্রাম খান জয়ের। দীর্ঘদিন এসব ছিলো অপ্রকাশিত।
হঠাৎ বুবলীকে নিয়ে শোবিজের আকাশে শাকিবের গোপন সম্পর্কের গুঞ্জন ছড়ালে অপু প্রকাশ্যে আনেন তাদের বিয়ে ও সংসারের খবর। গত বছরের এপ্রিলে ছেলেসহ একটি টিভি চ্যানেলের লাইভে এসে বিয়ের খবর ফাঁস করেন অপু বিশ্বাস। তখনই এই সম্পর্কের ফাটল শুরু। তৎক্ষণাত প্রতিক্রিয়ায় অপুকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেবেন না বলে জানান শাকিব।
এরপর অবশ্য বেশ কিছুদিন শাকিব ও অপুকে একসঙ্গে দেখা গেছে। তবে বেশিদিন তারা এক থাকেননি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয় দুজনের। সেসব মিডিয়াতে নিয়মিতই প্রকাশিত হয়। দুজনই দুজনের সম্পর্কে নানা কথা বলে বেড়ান সমালোচনায়। শাকিব দূরত্ব তৈরি করে দিলেন স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে।
Advertisement
এরপর শাকিব খান ৩ মাস আগে ডিভোর্স নোটিশ পাঠান অপুর কাছে। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতেই ডিভোর্স কার্যকর হলো আজ।
এলএ/জেআইএম