রাজধানীসহ সারা বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ আরও তরান্বিত করতে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ।
Advertisement
কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে তৈরি ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দ্বিতল সেতুটি ৪২টি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে। আর পিলার থেকে পিলার সংযুক্ত হবে ৪১টি স্প্যান দিয়ে। এই স্প্যানের উপরিভাগে থাকবে সড়ক পথ। এর নিচে থাকবে রেল পথ। ইতোমধ্যে দুটি স্প্যান স্থাপন করায় পদ্মা সেতুর ৩০০ মিটার কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। আর তৃতীয় স্প্যানটি পিলারের ওপর বসলে দৃশ্যমান হবে ৪৫০মিটার।
আগামীকাল রোববার পদ্মা সেতুর ৩৯ ও ৪০ নং পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) ৭-সি স্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেতু প্রকল্পের নির্ভরযোগ্য সূত্র।
এর আগে শুক্রবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেনে করে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে যা ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে রয়েছে।
Advertisement
পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকোশলী সূত্র জানায়, মাওয়া প্রান্তের ৩ নম্বর পিলারের কাজ শেষ। বর্তমানে কাজ চলছে ২, ৩, ৪ নং পিলারগুলোর। এর মধ্যে ২ নং পিলারের বেস গ্রাউটিং এবং ৪ ও ৫ নং পিলারের রেবার বাউন্ডিংয়ের কাজ চলছে। সম্প্রতি ৪১ নং পিলারের পিয়ার ক্যাপ কনক্রিটিং কাস্টিং শেষ হয়েছে। তাছাড়া ৩৯ ও ৪০ নং পিলার ‘৭ সি’ স্প্যান বসানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
সূত্র থেকে আরও জানা যায়, প্রথম স্প্যান বসাতে প্রকৌশলীদের কিছুটা বেশি সময় লেগেছে। তবে ব্যবহৃত ৩টি হ্যামার সক্রিয় থাকায় সামনের দিনগুলোতে পিলার বসানোর কাজে এখন সময় কম লাগছে। এদিকে শুকনা মৌসুমের সুবিধা কাজে লাগিয়ে জুন মাসের মধ্যে মাওয়া প্রান্তের পাইলিংয়ের কাজ এগিয়ে রাখতে চান সংশ্লিষ্টরা। জলের স্তর থেকে ১২০ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় স্প্যানগুলো বসানো হচ্ছে। একেকটি স্প্যানের ওপর ৩০৭৫টি স্ল্যাপ বসিয়ে তৈরি হবে ২২ মিটার প্রস্থের চার লেনের সড়ক।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সবকিছু অনুকূলে থাকলে দুই এক দিনের মধ্যেই বসবে তৃতীয় স্প্যান। ইঞ্জিনিয়ারিং খুঁটিনাটি নানা বিষয় আছে তাই নির্ধারিত সময় দিয়েও অনেক সময় তা হয়ে ওঠে না।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী হুমায়ূন কবীর জানান, জাজিরা প্রান্তের ৩৫ নম্বর পিলার এলাকায় স্প্যানটি অবস্থান করছে। ৩৯ ও ৪০ নং পিলার এলাকায় পৌঁছাতে কিছু সময় লাগবে। আগামীকাল সকালের দিকে ভাসমান ক্রেনটির সাহায্যে পিলারের ওপর উঠানো হবে স্প্যানটিকে। বর্তমানে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে।
Advertisement
তৃতীয় স্প্যানটি পিলারের ওপর বসলে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৪৫০ মিটার। এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর বসানো প্রথম স্প্যান। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান বসানো হয় ৩৮ ও ৩৯ নং পিলারের ওপরে।
ভবতোষ চৌধুরী নুপুর/এএম/জেআইএম