জাতীয়

যুগ যুগ ধরে ৭ মার্চের ভাষণের আবেদন থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর যেকোনো ভাষণের চেয়ে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী। এ ভাষণের কোনো তুলনা হয় না। এটি অতুলনীয় ভাষণ। ১৯৭৫ সালের পর ২১ বছর এ ভাষণ বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু এ ভাষণ আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ দিক নির্দেশনা ছিল এ ভাষণে। এই ভাষণের আবেদন যুগ যুগ ধরে থাকবে।

Advertisement

আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এবং বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর খামারবাড়িস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেছিলেন। এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। দেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হবে। খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, চিকিৎসা ও শিক্ষা পাবে। এটাই ছিল ৭ মার্চের ভাষণের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে।

Advertisement

তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার কারণে এ সবের অনেকটাই আমরা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণ করা আমাদের দায়িত্ব ও কতর্ব্য।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ কোনো লিখিত ভাষণ ছিল না। কোনো রিহার্সেল দিয়ে তৈরি করা ভাষণও না। এই ভাষণ বাঙ্গালী জাতিকে দীর্ঘ ২৩ বছরের লাঞ্ছনা-বঞ্চনা ও প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর।

ছয় দফাকে মুক্তির সনদ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় দফার বিপরীতে একটি আট দফা দেয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে দলের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত হয় ছয় দফা থেকে আমরা বিচ্যুত হবো না।

আগরতলা মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি (১৯৬৯) আগরতলা মামলার আসামি সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যা করা হয়। এ হত্যাই ছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা-পরিকল্পনার একটা অংশ। এরপর উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ফলে বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগরতলা মামলায় বঙ্গবন্ধু জেল থেকে বের হয়ে আসার পর প্রায়ই বলতেন- আমার ছয় দফা মানে বলেই তিনি একটা আঙুল দেখাতেন। তখন এই কথা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা নিষেধ ছিল। আমরা এ কারণে ইশারাতেই সব বুঝে যেতাম। এরপর তিনি লন্ডনে যান। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মিটিং করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জিতবে কিন্তু পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। তাই তিনি সেখানে বসেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে মার্শাল ল দেয়ার সময়েই তিনি স্বাধীনতার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। ছাত্রলীগকে দিয়ে ১৯৬২ সালের পর থেকেই একটা ‘নিউক্লিয়াস’ তিনি ফর্ম করেছিলেন। প্রতিটি জেলায়-মহকুমায় তিন সদস্যের কমিটি ছিল। স্বাধীনতার প্রস্তুতি অনেক আগেই নেয়া হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় তাদের নিয়েই মুজিব বাহিনী গঠন করা হয়।

এফএইচএস/এমবিআর/পিআর