বিশেষ প্রতিবেদন

‘বাবার অনুপ্রেরণায় আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছি’

স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার। নীল আকাশের বুকে মেঘের ভেলার মতো উড়বেন। স্বপ্নটা পূরণও করেছেন তিনি। কো-পাইলট হয়ে উড়ে বেড়াচ্ছেন আকাশের বুকে। এর মাধ্যমে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা অন্য নারীদের স্বপ্ন পূরণেরও পথিকৃৎ হয়েছেন। তিনি এখন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সফল নারী কো-পাইলট। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৪০ পাইলটের মধ্যে নারী পাইলট নয়জন। পুরুষদের মতোই তারাও সাফল্যের সঙ্গে পালন করছেন পেশাগত দায়িত্ব।

Advertisement

আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে জীবন আর পেশা নিয়ে কথা হয় বিমানের ফার্স্ট অফিসার মুনজারিন রাইয়ানের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রফিক মজুমদার।

জাগো নিউজ : কত সালে আপনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যোগ দেন?

মুনজারিন : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে আমি ক্যাডেট পাইলট হিসেবে ২০১১ সালে যোগদান করি।

Advertisement

জাগো নিউজ : কী কী এয়ারক্রাফট চালানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে আপনার?

মুনজারিন : ২০১৫ সালে পদোন্নতি লাভ করে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে প্রথমবারের মতো ড্যাশ-৮-কিউ-৪০০ এয়ারক্রাফট উড্ডয়ন করি। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বোয়িং ৭৩৭ উড্ডয়ন করার সৌভাগ্য অর্জন করি। বর্তমানে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজের কো-পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।

জাগো নিউজ : এ পেশাকে কি আপনি চ্যালেঞ্জিং মনে করেন?

মুনজারিন : এ পেশায় অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ। একটি ফ্লাইটের নিরাপত্তাসহ সবকিছু দেখভাল করতে হয়। তবে এ পেশায় প্রতিদিনই নতুন কিছু শেখার থাকে। এজন্য বেশি ভালো লাগে। আর যখন আমরা ইউনিফর্ম পরি তখন আমরা নারী বা পুরুষ নই, তখন আমরা ক্রু। ফলে নারী বলে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। দক্ষতা দেখাতে পারলে এগিয়ে যেতে কোনো বাধা নেই।’

Advertisement

জাগো নিউজ : কার অনুপ্রেরণায় এ পেশায় এলেন?

মুনজারিন : বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন আমার অনুপ্রেরণা। আজ আমি যে অবস্থানে আছি, তা বাবার জন্যই। বাবা পাইলট ছিলেন বলে তার কাছ থেকে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছি। বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সময় বাবা সেখানে প্রশিক্ষক ছিলেন। প্রশিক্ষণ বিমানেও তার সঙ্গে প্রথম ফ্লাই করি।

জাগো নিউজ : নারী দিবসে আমাদের দেশের মেয়েদের বিষয়ে আপনার কোনো পরামর্শ বা উপদেশ আছে কি?

মুনজারিন : স্বপ্ন দেখুন এবং স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করুন। আপনি সফল হবেনই। আমার যখন ১০ বছর বয়স তখন ডায়েরিতে বিমানের ছবি আঁকতাম আর নিজের নামের পাশে লিখতাম ক্যাপ্টেন মুনজারিন রাইয়ান। একদিন মা (যিনি একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ) আমার ডায়েরি বাবাকে দেখালেন। যদিও আমার মায়ের সুপ্ত ইচ্ছা ছিল আমাকে ডাক্তারি পড়ানোর কিন্তু আমার পাইলট হবার স্বপ্ন ও আগ্রহ দেখে মা আমাকে অনুপ্রেরণা দেন।

সর্বশেষ আমি বলতে চাই, প্রতিটা নারীরই স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে। আজকের নারীদের পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জীবন ও সমাজের সবক্ষেত্রে মাথা উঁচু করে গৌরবের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।

আরএম/জেএইচ/জেডএ/আরআইপি