ধর্ম

সব দ্বীনি আলোচনাই প্রিয়নবির সীরাত

কুরআন-হাদিসের সব কথাই মানুষের জীবন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত দ্বীনি আলোচনা। আর দ্বীনের সব বিষয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাওল, ফে’ল ও তাকরির সীরাতের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো বিষয়ে যা বলেছেন, যা করেছেন বা যে বিষয়ে মৌন সমর্থন দিয়েছেন বা নিরব রয়েছেন এর সবই তার সীরাত তথা আদর্শ।

Advertisement

আবার এর বাইরে যে সব বিষয়ে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকাও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত তথা আদর্শ।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে এক মহিলা জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত তথা আদর্শ কি বা কেমন ছিল? হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা জানতে চাইলেন, তুমি কি কুরআন পড়নি? মহিলা বলল, হ্যাঁ, কুরআন তো পড়েছি। তখন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, (كَانَ خُلُقُه الْقُرْأَنَ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত হলো পবিত্র কুরআন।’

কুরআনই ছিল প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত, চরিত্র তথা আদর্শ। তাই তো বলা হয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন জীবন্ত কুরআন বা কুরআনের পরিপূর্ণ প্রতিচ্ছবি।’

Advertisement

কুরআনে পাকে যত আদর্শের কথা আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমেই তা নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেছেন। তারপর তাঁর সাহাবায়ে কেরামের মাধ্যমে সে আদর্শের বা হুকুমের বাস্তবায়ন করিয়েছেন।

উল্লেখ করা যেতে নামাজের কথা। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর এ জাতির জন্য দৈনন্দিন জীবনে ৫ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। এ নামাজ কিভাবে পড়তে হবে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা পড়ে সাহাবায়ে কেরামকে দেখিয়েছেন। তাদের কাছে বর্ণনা করেছেন। আর তা হাদিস হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে।

নামাজ সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘(صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُوْنِىْ اُصَلِّىْ) অর্থাৎ আমাকে যেভাবে নামাজ পড়েত দেখেছ, সেভাবেই তোমরা নামাজ আদায় কর।’

নামাজের তাকবির, কেরাত, রুকু, তাসবিহ, সেজদাহ, তাশহহুদ ইত্যাদি আদায় করতে হবে তা বাস্তবে দেখানোর পাশাপাশি হাদিসেও বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন।

Advertisement

আর কুরআনের সব নির্দেশগুলোই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়ে গেছেন যে, কুরআনই হলো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মিশন, সীরাত ও আদর্শ।

কুরআনের এ সব নির্দের্শের বিষদ বর্ণনা হলো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস। আর দুনিয়ার জীবনের এ সব দ্বীনি আলোচনাই হলো কুরআন-হাদিসের কথা। যা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র জীবনাদর্শ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন্ত আদর্শ কুরআন, হাদিস ও দ্বীনি শিক্ষা অনুযায়ী জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। কুরআন-হাদিসের রঙ্গে নিজেদের জীবনকে রঙিন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস