হঠাৎ করেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে। ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে সংস্কার শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে প্রায় ৯০ কোটি টাকার যে ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) তৈরি করেছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তা এখন নতুনভাবে করতে বলেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় চাচ্ছে দেশের খেলাধুলার প্রধান ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের এত বড় সংস্কারের আগে বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন ও সংশ্লিষ্টদের মতামত নিতে।
Advertisement
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সুকুমার সাহা জাগো নিউজকে বলেন,‘আমাদের পাঠানো ডিপিপি মন্ত্রণালয়ের যাচাই বাছাই কমিটি দেখে কিছু সংযোজন বিয়োজন করেছে। তবে প্রজেক্ট চূড়ান্তের আগে মন্ত্রণালয় ফেডারেশনগুলোর মতামত নিতে বলেছে, যাতে সংস্কার নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কোনো প্রশ্ন না ওঠে। বিশেষ করে ফুটবল ও অ্যাথলেট ফেডারেশনের মতামত জরুরি। কারণ, এ স্টেডিয়াম এ দুই খেলার জন্যই বেশি ব্যবহার হয়। ফেডারেশনগুলোর পাশপাশি আমরা গণমাধ্যামকেও মতামতের জন্য ডাকবো। কারণ তারাও খেলাধুলার বড় একটা পার্ট।’
আগামী ১০ মার্চ শুরু হবে বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গেমস উদ্বোধন করবেন। সবাই ব্যস্ত গেমস নিয়ে। যে কারণে স্টেডিয়াম সংস্কার নিয়ে ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওই কর্মকর্তা। যুব গেমসের উদ্বোধন উপলক্ষ্যেও প্রায় ৮০ লাখ টাকার কাজ হচ্ছে এ স্টেডিয়ামে।
মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প যাচাই বাছাই কমিটি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সংস্কার পরিকল্পনায় অনেক সংযোজন-বিয়োজনও করেছে। এই ডিপিপি’র মধ্যে হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামের উন্নয়নও ছিল। যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছিল আড়াই কোটি টাকার মতো। যাচাই-বাছাই কমিটি হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামের উন্নয়ন অংশটা বাদ দিয়েছে।
Advertisement
এনএসসির পরিকল্পনায় নতুন করে সংযোজন হচ্ছে অত্যাধুনিক পূর্ণাঙ্গ জিম। দেশের খেলাধুলার ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য আর্কাইভও তৈরি করা হবে এ স্টেডিয়ামে। ফুটবলের স্থানীয় যে ড্রেসিং রুম আছে সেগুলো আরো উন্নত করার পরিকল্পনাও অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে ডিপিপিতে। স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি ভেঙ্গে আরো বড় ও সুন্দর করে তৈরির বিষয়টিও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে সংস্কার পরিকল্পনায়।
প্রশ্ন উঠেছিল ২০ কোটি টাকার মতো খরচে গ্যালারিতে শেড বসানো নিয়ে। সংস্কার পরিকল্পনা থেকে এ অংশটা বাদ দেয়ার পক্ষেও অনেকে বলেছিলেন। তবে শেড না থাকলে গ্যালারিতে বসানো উন্নত চেয়ার দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে। যে কারণে শেড বসানোর বিষয়টি এখনো রয়ে গেছে এনএসসি কর্মকর্তাদের মাথায়।
স্টেডিয়ামের মূল কাঠামো ঠিক রেখেই করা হবে এ সংস্কারযজ্ঞ। যেখানে সবচেয়ে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে গ্যালারিতে শেড বসানোর জন্য। পুরো সংস্কার কাজের বাজেট ৮৭ কোটি টাকা। হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম সংস্কার পরিকল্পনা থেকে বাদ দেয়ায় ব্যয় যেমন কমবে তেমন যোগ হবে জিম, আর্কাইভ ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরিতে। কাজের সংযোজন-বিয়োজনে বাজেটেও আসবে পরিবর্তন।
শেড ও চেয়ার স্থাপন ছাড়া বেশি টাকার কাজের মধ্যে থাকবে ফ্লাডলাইট পরিবর্তন ও নুতন করে অ্যাথলেটিক ট্র্যাক স্থাপন। ফ্লাডলাইটের টাওয়ার অপরিবর্তিত রেখে শুধু বদলে ফেলা হবে বাতি। এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো স্টেডিয়ামে আলো ছড়াবে এলইডি বাতি। এর মাধ্যমে আলো ও সৌন্দর্য দুটিই বাড়বে।
Advertisement
পাশপাশি ডোপটেস্ট রুম নির্মাণ, মিডিয়া সেন্টার আধুনিকায়ন, টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য ক্যামেরা স্ট্যান্ড তৈরি ও স্কোর বোর্ড ঠিকঠাক করা হবে। স্টেডিয়ামের চারদিকের রাস্তা আরও উন্নত করা হবে। পুরো স্টেডিয়ামেই লাগবে রঙের ছোঁয়া।
আরআই/এমআর/পিআর