খেলাধুলা

সবাইকে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার আহ্বান মাশরাফির

ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজে সূচনাটা বাংলাদেশের হয়েছিল দুর্দান্ত; কিন্তু রাউন্ড রবিন লিগে ফিরতি পর্বের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৮২ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ হেরেছিল ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। ভরাডুবির সেই তো শুরু। এরপর টানা ব্যর্থতায় ভরা বাংলাদেশের ক্রিকেট। ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজে দারুণ ফেবারিট থাকলেও, বাংলাদেশ ফাইনালে হেরেছে অতিরিক্ত চাপের মধ্যে থেকে।

Advertisement

এরপর টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের পর চূড়ান্ত হয়েছে বাংলাদেশের ব্যর্থতার ষোলকলা। ঘরের মাঠে এতটা ভরাডুবি বাংলাদেশের হবে, এটা যেন কেউ কল্পনাতেই আনতে পারেনি। যে কারণে টানা পরাজয়ের ব্যর্থতা সঙ্গে নিয়েই শ্রীলঙ্কার নিদাহাস ট্রফিতে খেলতে গেলো বাংলাদেশ। ঘরের মাঠের ব্যর্থতা সঙ্গী থাকার কারণে শ্রীলঙ্কায় টাইগারদের পরীক্ষাটা আরও বেশি কঠিন। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাছাড়াও এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মূল প্রতিপক্ষ ভারত।

নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ কেমন করবে? বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা খুব বেশি প্রত্যাশা করেন না। ফরম্যাটটা যেহেতু টি-টোয়েন্টি, সে কারণে প্রত্যাশাও কম। ওয়ানডে ফরম্যাট হলে কিছুটা প্রত্যাশা করা যেতো। কারণ, ওয়ানডে ফরম্যাটেই কিছুটা ভালো খেলে বাংলাদেশ।

তবে মাশরাফির প্রত্যাশা হলো দল যেন ভালো খেলার চেষ্টা করে। ভালো কিছুর প্রত্যাশা তো থাকেই। সে সঙ্গে সেই ভালোর চাপে যেন ভেঙে না পড়ে দল, সে পরামর্শই দিলেন তিনি। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে শেষ ওভারে টানা চার বলে চারটি উইকেট নিয়ে আবাহনীকে জেতানোর পর উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে এমন কথা বলেন মাশরাফি।

Advertisement

নিদাহাস ট্রফিতে দলের কাছে মাশরাফির চাওয়া কী? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রত্যাশা তো আছে অবশ্যই ভালো কিছু। তবে, ভালো খেলতে হবে- এই চাপটা যেন আমরা খেলোয়াড়দের ওপর না দেই। আমি, আপনি, সমর্থক, মিডিয়া- সবাই যদি ভালো খেলার চাপ দেই, তাহলে সেই চাপে দল আরও গোলমেলে হয়ে যাবে। যেহেতু আমরা হারের মধ্যে রয়েছি। দলের খেলোয়াড়দের বোঝাতে হবে, না পারলে সমস্যা নেই। তবে, স্লোগান উঠুক ভালো খেলার সর্বোচ্চ চেষ্টাটা যেন থাকে।’

মাশরাফির মতে, এই দুর্দিনে দলের পাশে সবাইকে থাকতে হবে। আমাদের সবাইকেই ক্রিকেটারদের নিয়ে, দল নিয়ে উদ্দীপনামূলক কথা-বার্তা বলা উচিৎ এবং সবারই ক্রিকেটারদের পাশে থাকা উচিৎ। সময়টা ভালো যাচ্ছে না। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরুর দিকে একটি-দুটি জয় রাখতে পারে খুব বড় ভূমিকা।’

মাশরাফি যখন আবাহনীর হয়ে খেলছিল, তখন কলম্বোয় ক্লাব মাঠে শ্রীলঙ্কান বোর্ড সভাপতি একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে রান করেছেন লিটন দাস, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহরা। এসব সংবাদ শুনে খুশি মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘শুনে খুশি লাগছে যে, প্র্যাকটিস ম্যাচে আমরা বড় ব্যবধানে জিতেছি। লিটন, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহ রান পেয়েছে। বিদেশের মাটিদেত কোনো প্রস্তুতি ম্যাচে জয় জায়গামত ভালো খেলতে সহায়তা করে। গত বছর আমরাও ওয়ানডে সিরিজের আগে এই কলম্বো ক্লাব মাঠে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে মাত্র ২ রানে হেরেছিলাম, এক পাহাড়সমান স্কোরের পিছু নিয়ে। সেটা আমাদের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো খেলতে সাহস জুগিয়েছিল।’ আগেরদিনই তামিম ইকবাল ঘরের মাঠে এমন ভরাডুবি সম্পর্কে অজুহাত দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমরা নার্ভাস ছিলাম।’ সত্যিই কি নার্ভাস ছিল বাংলাদেশ? জানতে চাইলে মাশরাফি জবাবে বলেন, ‘আমিও একমত, হয়তো কিছুটা চাপে ছিলাম। প্রথম চাপ ছিল ফাইনাল খেলার। পরের চাপ ছিল, যে করেই হোক ফাইনালে জিততে হবে। এ রকম চাপ অনেক সময় ভালো খেলায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।’

মাশরাফির আহ্বান, বাংলাদেশের এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। এই চলতি পথে উত্থান-পতন থাকবেই। সেখানে যেন কোনো বাধা না আসে। সবাই যেন ক্রিকেটারদের পাশে থাকেন। তিনি বলেন, ‘আামাদের এখন এগিয়ে যাওয়ার সময় । এ পথে কখনও থমকে দাঁড়াতে হয়, গতিপথ স্লথ হয়ে যায়। আমাদেরও হয়তো তাই হয়েছে। তাই বলে এগিয়ে যাওেয়ার ইচ্ছাটা, আকাঙ্খাটা রাখতে হবে অটুট। আমরা যারা দলের বাইরে, দেশবাসী, সমর্থক এবং মিডিয়া- সবাই আসুন দলকে অনুপ্রাণিত করি, তাদের পাশে থাকি।’

Advertisement

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি