রাজধানীতে মশার উপদ্রব দিন দিন এতটাই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে যে, কোনো ফর্মুলাই এখন আর কাজে আসছে না। গত কয়েক সপ্তাহে রাজধানীতে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দিন নেই, রাত নেই; প্রতি মুহূর্তে চলছে মশার অত্যাচার, একপ্রকার অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী।
Advertisement
গত বছর এডিস মশা বাহিত চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ৪৫০ কিলোমিটার নর্দমায় গাপ্পি মাছের পোনা ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। এ উদ্যোগ সেই সময় ব্যাপক আলোচিত হয়।
গত বছরের ৭ আগস্ট রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাস মিলনায়তনে ‘চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক সচেতনতামূলক’ এক সেমিনারে মেয়র সাঈদ খোকন বলেছিলেন, ‘গাপ্পি মাছ দৈনিক ৫০টি মশার লার্ভা খেতে সক্ষম। তাই সিটি কর্পোরেশন ৪৫০ কিলোমিটার ড্রেনে প্রাকৃতিক উপায়ে মশক নিধনের এ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ জন্য গাপ্পি মাছের ১৫ লাখ পোনা প্রয়োজন। চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে এলেও বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। গাপ্পি মাছ প্রকল্পের কার্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
পরে মেয়র বিশ্ববিদ্যালয়টির সুইমিংপুলে প্রতীকী গাপ্পি মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
Advertisement
ওই সময় ডিএসসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পোয়েসিলা রেটিকুলাটা প্রজাতির এ রঙিন মাছ অ্যাকুরিয়ামের বাহারি মাছ হিসেবে পরিচিত। সব ধরনের আবহাওয়ায় এ মাছ দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে এবং পানির ওপরের অংশে ঘোরাফেরা করে। এসব মাছ মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মশক নিয়ন্ত্রণে আগেও গাপ্পির ব্যবহার হয়। গত কয়েক সপ্তাহজুড়ে যখন মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী তখন অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, গাপ্পি মাছের কী খবর, মশা নিধনে গাপ্পি মাছ কাজ করছে কিনা?
মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ রাজধানীবাসীর এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ডিএসসিসির উদ্যোগ নিয়েছিল ৪৫০ কিলোমিটার ড্রেনে ১৫ লাখ গাপ্পি মাছ ছাড়বে। কিন্তু বাস্তবে গাপ্পি মাছ ড্রেনে ছাড়াই হয়নি।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বেলাল বলেন, সে সময় উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল গাপ্পি মাছ ছাড়ার। কিন্তু সেটা কতটা কার্যকার হবে তা নিয়ে আমাদের সংশয় ছিল। তাই নিশ্চিত না হয়ে অযথা টাকা খরচ হবে- এ কারণে গাপ্পি মাছ নর্দমায় ছাড়া হয়নি।
‘একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষামূলকভাবে গাপ্পি মাছ অবমুক্ত করেছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ তেমন কাজে আসেনি’- যোগ করেন তিনি।
Advertisement
এএস/এমএআর/পিআর