মশা নিধনের নামে স্প্রে মেশিনে কেরোসিন বেশি দিয়ে ধোঁয়া ছিটানোর অভিযোগ করছেন রাজধানীর পুরান ঢাকার এলাকাবাসী। হাজারীবাগ, লালবাগ, চকবাজার, বংশাল, কোতোয়ালি, মুগদা, মানিকনগর ও গেন্ডারিয়া এলাকায় বসবাসকারী লোকজন এ অভিযোগ করেছেন।
Advertisement
তারা বলছেন, এক সময় বর্ষাকালে রাতে মশার উৎপাত ছিল। এখন সারা বছর দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই মশার অত্যাচার। এর মূল কারণ মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশনের কোনো যুগোপযোগী উদ্যোগ নেই। যা আছে তা লোক দেখানো। মশা নিধনের নামে স্প্রে মেশিনে কেরোসিন বেশি দিয়ে ধোঁয়া ছিটাচ্ছে। মশা নিয়ন্ত্রণে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাই বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ সর্বত্রই দিন নেই, রাত নেই সব সময় মশার উৎপাত। মশার কয়েল, স্প্রে, ইলেকট্রিক ব্যাট অথবা সিটি করপোরেশনের ফগার মেশিনের ধোঁয়া কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। ফলে মশার অত্যাচারে অস্থির হয়ে উঠেছে নগরবাসী।
রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা রাসেল ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, আগে রাতে মশার উৎপাত ছিল। এখন দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই মশার অত্যাচার। আর হবে না কেন মশা নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ আছে? মাঝে মধ্যে সিটি করপোরেশনের লোকজন স্প্রে করে। ওষুধ তো দেয়ই না স্প্রে মেশিনে কেরোসিন ভরে ধোঁয়া ছিটায়। এতে কি মশা যাবে? মানুষকে ধোঁকা দেয়া ছাড়া কিছুই না। তিনি বলেন, শীত শেষ না হতেই মশার যে যন্ত্রণা সামনে বর্ষাকাল কি যে অবস্থা হবে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার ৩২ ওয়ার্ড বাবু বাজার এলাকার কাউন্সিলর মো. বিল্লাল শাহ জাগো নিউজকে বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে বিভিন্ন স্থানে মশার ওষুধ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। মশার ওষুধে বেশি পরিমাণ কেরোসিন দেয়ায় ধোঁয়া হচ্ছে কিন্ত মশা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না এমন অভিযোগের উত্তরে এ কাউন্সিলর বলেন, সিটি করপোরেশন তাদের অভিজ্ঞ লোক দিয়ে মশার ওষুধ মেশায়। এতে আমাদের কিছু করার নেই।
Advertisement
ধুলাইখাল এলাকার বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, মশা বেশ যন্ত্রণা দিচ্ছে। দিনের বেলাতেও এখন মশারি টানিয়ে থাকতে হয়। মশার কামড়ে আমার তিন বছরের বাচ্চা অসুস্থ্ হয়ে গেছে। বিকেলে সিটি করপোরেশনের লোকেরা মশার ওষুধ দিল। পুরো এলাকা ধোঁয়া হয়ে গেছে। ঘণ্টা দুয়েক পর আবার সেই আগের অবস্থা। ওষুধ দেয় না কি দেয় তারাই ভালো জানে।
এদিকে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন জানান, মশার ওষুধ দেয়ার সময় নির্দিষ্ট পরিমাণে কেরোসিন মেশাতে হয়। তবে বেশি পরিমাণ কেরোসিন মেশালে কার্যক্ষমতা কমে যায়। এ বিষয়ে ডিএসসিসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণে ওয়ার্ডগুলোতে কাজ করছি। রাজধানীর হাজারীবাগের গৃহিণী সুফিয়া বেগম বলেন, এখন যে মশা এটি খুব ভয়ঙ্কর। দিনেও কামড়ায়। রান্না করার সময় মশার কয়েল জ্বালিয়ে কাজ করতে হয়। তারপরও কাজ হয় না। মশার যন্ত্রণা এতই বাড়ছে যে মশার কয়েল ও স্প্রে কিছুতেই কাজ হয় না। কামড় দিলে শরীর জ্বালা পোড়া করে ফুলে যায়।
পোস্তা, লালবাগ এলাকার ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মশা বড় সমস্যা। ইতোমধ্যে মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আমাদের পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। ড্রেনসহ বিভিন্ন জায়গার ময়লা পরিষ্কার করা হচ্ছে। মশার ওষুধ দেয়া হচ্ছে।
এসআই/ওআর/এমএস
Advertisement