অর্থনীতি

সাড়া দিচ্ছে না সুইস ব্যাংক!

বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচারকারীদের তথ্য পেতে অগ্রগতি নেই। এ ব্যাপারে তেমন আগ্রহও দেখাচ্ছে না সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গত মাসে অর্থ পাচারের তথ্য প্রকাশের পর বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ থেকে চিঠি দেয়া হয় সমঝোতা চুক্তি সইয়ের আগ্রহ দেখিয়ে। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও সুইস ব্যাংক কোনো জবাব দেয়নি। গত বছরও একই ধরনের চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে চিঠিরও জবাব পাওয়া যায়নি। তবে অর্থ পাচারের খবর সংবাদ মাধ্যমে আসার পর থেকে উদ্বিগ্ন রয়েছেন অর্থ পাচারকারীরা। জানতে চাইলে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা গত মাসের শেষ দিকে চিঠি দিয়ে সমঝোতা করতে চেয়েছি। কিন্তু কোনো জবাব দেয়নি তারা। তবে আমরা আশা করছি, তারা আগ্রহ দেখিয়ে এগিয়ে আসবে।জানা গেছে, টাকা পাচারের নিরাপদ জায়গা হিসেবে সুইস ব্যাংকের পরিচিতি বিশ্বজোড়া। সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন সরকারি পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করে সুইস ব্যাংকে হিসাবধারীদের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর থেকে বাংলাদেশও চেষ্টা করছে। যদিও সুইস ব্যাংকের তালা খোলা কঠিন। তবে অসম্ভব নয়।সূত্র জানায়, বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ এবার বিষয়টি দক্ষভাবে এগিয়ে নিতে চায়। এজন্য প্রয়োজনে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে। এবার আর গড়পড়তা কোনো তথ্য না চেয়ে সুনির্দিষ্ট করে তথ্য চাওয়া হয়েছে এবং সমঝোতা সই করতে আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে।সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী সুইস ব্যাংকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা রয়েছে ৫০ কোটি ৬০ লাখ সুইস ফ্রা, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা চার হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা (এক ফ্রা ৯০ টাকা হিসেবে)। ২০১৩ সালের জমা তিন হাজার ২৩৬ কোটি টাকা থেকে তা এক হাজার ৩১৮ কোটি টাকা বেশি।সুইস ব্যাংক কখনোই আমানতকারীদের তথ্য প্রকাশ করে না, টাকার পরিমাণও জানতে দেয় না। ব্যাংক টাকা জমা রাখে একটি কোড নম্বরের ভিত্তিতে। বেশ কয়েক বছর ধরেই আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে সুইজারল্যান্ড। তবে বিশ্বব্যাপি টাকা পাচার রোধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ব্যাপকভাবে কার্যকর হওয়ায় সুইস ব্যাংক গত বছর থেকে দেশওয়ারী অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করছে।ধারণা করা হচ্ছে, এবার সঠিকভাবে এগিয়ে যেতে পারলে সুইস ব্যাংক হয়তো বাংলাদেশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে। কারণ ব্যাংকটি ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপি ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পড়েছে।জানা গেছে, গত বছরও সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশিদের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য বিনিময়ের আগ্রহ দেখিয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করতে চিঠি দেয় সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ওই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি তারা। হংকং-সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (এইচএসবিসি) মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও একই আগ্রহের কথা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আবারো চিঠি দেয় সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। এরও জবাব পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।# সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ৪,৩০০ কোটি টাকা# উদ্বিগ্ন সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারকারীরা# সুইস ব্যাংককে আবারো চিঠি দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকএসএ/বিএ/আরআইপি

Advertisement