এতকাল তিনি ছিলেন পেস বোলিং কোচ। কাজ করেছেন শুধুই পেসারদের নিয়ে। সে মিশনে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য সাফল্য নেই।
Advertisement
ফাস্টবোলার হিসেবে ছিলেন অনেক বড়। সর্বকালের সেরাদের একজন। তাই ফাস্টবোলিংয়ের নিগুঢ় রহস্য, টেকনিক তার চেয়ে ভালো জানা-শোনার আছেনই বা কজন? হয়ত কোনো কারণে বাংলাদেশের পেসাররা তার কথা বুঝতে পারছেন না। কিংবা তার বুদ্ধি ও পরামর্শ সঠিক ভাবে অনুধাবন করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে কাঙ্খিত ও প্রত্যাশিত উন্নতি হয়নি পেসারদের।
এমন ভেবেই আসলে সমালোচনার তীর ছুঁড়েন না কেউ। না হয়, সেই ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পেসারদের সাথে কাজ করা ওয়ালশের পারফরম্যান্স ও প্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠতো জোরেশোরে। তা ওঠেনি। বরং বোর্ড এবার তার কাঁধে দিয়েছে দল পরিচালনার সমুদয় দায়িত্ব। এবার নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হেড কোচ কোর্টনি ওয়ালশ।
এতকাল শুধু পেস বোলারদের নিয়ে কাজ করা ওয়ালশ হেড কোচের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কতটা কি করতে পারবেন, তা নিয়েও আছে সংশয়। তবে যার ওপর বিসিবি এবার ভারপ্রাপ্ত কোচের দায়িত্ব অর্পণ করেছে, সেই কোর্টনি ওয়ালশ কিন্তু মোটেই চিন্তিত নন। পেস বোলিং কোচ থেকে দলের খারাপ সময়ে ভারপ্রাপ্ত হেড কোচের দায়িত্ব পাওয়া ওয়ালশকে কোনো ভয়-ডর আচ্ছন্ন করতে পারেনি। এ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট গ্রেট বরং রোমাঞ্চিত।
Advertisement
দেশ ছাড়ার ২৪ ঘন্টা আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সন্মেলনে ইতিবাচক ওয়ালশের দেখা মিললো। তার কথা-বার্তা ও শরীরি অভিব্যক্তি বলে দিলো, নতুন দায়িত্ব রীতিমত চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন। সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃঢ় সংকল্প ওয়ালশ টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পদ বিলোপ করে কাউকে হেড কোচ করায় বেশ সন্তুষ্টই।
তার সোজা সাপটা উচ্চারণ, আগের সিরিজ ও মিশনে সব কিছুই কেমন যেন হুট করে হয়ে গেল। এবার পুরো বিষয়টিই ভিন্ন। এবার একজনকে অনানুষ্ঠানিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যিনি পুরো প্রস্তুতি পর্ব এবং অনুশীলন প্রক্রিয়া পরিচালনার পাশাপাশি সব কিছু নিশ্চিত করবেন।
ওয়ালশ নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে বলেন, ‘আমার মনে হয় কাউকে হেড কোচ করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। অত্যন্ত পুলকিত যে, বোর্ড আমার ওপর আস্থা রেখে এই পদে আসীন করেছে। আমি জানি আমার দায়িত্ব কতটা। আমি সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে সামর্থ্যের শেষ বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করবো। আমার কাজ হবে লক্ষ্য ও পরিকল্পনার যতটা সম্ভব সফল ও বাস্তব প্রয়োগ ঘটানো। আমি এ দায়িত্ব প্রাপ্তিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছি। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সর্বাত্মক চেষ্টাই থাকবে।’
বোর্ড প্রধান, সব পরিচালক ও দলের প্রতিটি সদস্যর কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশায় বাংলাদেশের নতুন ভারপ্রাপ্ত হেড কোচ। সেই সাথে সবার সাথে বসে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা স্থির করার কথাও ভাবছেন। তাইতো মুখে এমন সংলাপ, ‘আমি রোমাঞ্চিত। উত্তেজিত। একটা অন্যরকম পুলক অনুভব করিছি। আমি আশা করছি, দল পরিচালনায় বিসিবি, বোর্ড সভাপতি, পরিচালকবৃন্দ এবং সিনিয়র ও জুনিয়র সব ক্রিকেটারের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা পাবো।’
Advertisement
দায়িত্ব প্রাপ্তির পর তাৎক্ষণিকভাবেই সবার সাথে বসে শলা-পরামর্শ করতে শুরু করেছেন ওয়ালশ।তার কথা, ‘একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করেছি আমরা। আমরা আসলে কি করতে চাই, সে লক্ষ্য পূরণে কি কি করণীয়, কোন পথে হাঁটতে হবে, তা নিজেরা বসে ঠিক করতে হবে। সে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে এরই মধ্যে।’
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ওপেনার তামিম ইকবাল, পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান পিএসএল খেলে আরব আমিরাত থেকে ফেরার পর দলের প্রস্তুতিতে শেষ তুলির আঁচড়টা দিতে চান ওয়ালশ।
নিদাহাস ট্রফিতে দলের লক্ষ্য ও পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য থাকবে, যত বেশি সম্ভব ম্যাচ জেতা। আমি খুবই আশাবাদি যে, আমার সে লক্ষ্য পূরণ হবে। ফাইনাল খেলতে পারলে খুব ভালো লাগবে।’
এআরবি/এমএমআর/জেআইএম