খেলাধুলা

আকরামের কথা শুনে ক্ষুদ্ধ বুলবুল

চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পদত্যাগের পর হঠাৎ করেই আলোচনায় চলে এসেছিল বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক এবং আইসিসিতে কর্মরত আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম। গুঞ্জন উঠেছিল, জাতীয় দলের কোচ হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটসম্যানের নাম। যদিও সে সব কেবলই ছিল গুঞ্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

Advertisement

স্থানীয় কোচদের তুলনায় বিসিবি সব সময়ই চেয়েছে বিদেশি কোচ নিয়োগ দিতে। সাফল্য পাক বা না পাক- বিদেশী কোচ ছাড়া যেন চলবেই না বিসিবির। স্থানীয় কোচরা এ কারণে কখনোই বিবেচনায় আসতে পারেন না।

স্থানীয় কোচদের মধ্যে সব সময়ই আলোচনায় থাকেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সারোয়ার ইমরান, আমিনুল ইসলাম বুলবুল কিংবা খালেদ মাহমুদ সুজনের নাম। সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে খালেদ মাহমুদ সুজনের ওপর দায়িত্ব দিয়ে বিসিবি একটা টেস্ট কেস করে দেখেছে। তাতে সবারই পর্যবেক্ষণ, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য একজন কড়া ধাঁচের বিদেশী কোচই প্রয়োজন। যিনি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করবেন ক্রিকেটারদের।

এরই মধ্যে হঠাৎ আবার আলোচনায় উঠে আসলো আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম। একটি জাতীয় পত্রিকার ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে গিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান দাবি করেছেন, ‘বুলবুলকে (আমিনুল ইসলাম) আমরা অনেকবার প্রস্তাব দিয়েছি। সে যেহেতু আইসিসির সঙ্গে যুক্ত, হয়তো সেভাবে সময় দিতে পারবে না।’

Advertisement

শুধু জাতীয় দল নয়, বিপিএলে চিটাগাং ভাইকিংসের জন্যও নাকি বুলবুলকে পেতে চেষ্টা করেছিলেন আকরাম খান। সেটাও প্রসঙ্গ টেনে বললেন তিনি, ‘আমি একবার চিটাগং ভাইকিংসের (বিপিএলের দল) জন্য চেষ্টা করেছিলাম। ওর আসলে সময় কম। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সে সময় দিতে পারবে না।’

‘বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সময় দিতে পারবেন না’- এমন কথা বলে প্রকারান্তরে আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে দুরেই ঠেলে দিয়েছেন ক্রিকেট অপসের চেয়ারম্যান আকরাম খান।

ফেসবুক লাইভে বলা কথা নিয়ে সেই পত্রিকায় ‘বুলবুলকে অনেকবার কোচের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল’- শিরোনামে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। এই সংবাদেরই তীব্র প্রতিবাদ করলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। নিজের ফেসবুক পেজে বুলবুল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘এমন শিরোনাম দেখে আমি যারপরনাই বিস্মিত, আশ্চর্য এবং ক্ষুব্ধ।’

বিসিবির কাছ থেকে কখনোই কোচের প্রস্তাব পাননি বলে জানিয়েছেন বুলবুল। তিনি লিখেছেন, ‘আমি কখনোই বিসিবির পক্ষ থেকে কোনো পর্যায়ের (অনুর্ধ্ব-১৯ দলেরও) কোচ হওয়ার প্রস্তাব পাইনি। এমনকি সর্বশেষ বিপিএলে অধিনায়কদের জন্য নির্ধারিত ক্যাপ্টেন বক্সের জন্য তালিকায় আমার নামই ছিল না।’

Advertisement

বিপিএল এবং ডিপিএলে (ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে) প্রতি বছরই একটা-দুটা প্রস্তাব পেয়ে থাকেন বুলবুল। সে কথা জানালেন তিনি নিজেই। বুলবুল লিখেছেন, ‘বিপিএলে এবং ডিপিএলে প্রতিবছরই আমি কোচ হওয়ার প্রস্তাব পাই। আমি তাদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। আমি খুব বিনয়ের সঙ্গে তাদের সে সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ, মাত্র ১ মাসের জন্য আমি তো আমার চাকরি ছাড়তে পারি না!’

আকরাম খান কী বিসিবির ক্রিকেট অপসের চেয়ারম্যান হিসেবে কথা বলেছেন কি না সে প্রশ্নও তুলেছেন বুলবুল। তিনি লিখেন, ‘আকরাম খান কোন পক্ষের হয়ে কথা বলেছেন? ক্রিকেট অপারেশন্স? বিসিবি? নাকি তার বিপিএল দলের হয়ে?’

প্রস্তাব না পাওয়াতে খুব বেশি দুঃখ নেই বুলবুলের। তবে মিথ্যা শুনে তার খুব ঘৃণা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রস্তাব (বিসিবির পক্ষ থেকে) না পেলেও আমি খুব ভালো আছি; কিন্তু আমি এ ধরনের মিথ্যার কারণে ক্ষুব্ধ।’

আকরাম খানকে উদ্দেশ্য করে বুলবুল লিখেন, ‘প্লিজ আপনি যা করছেন এবং বলছেন, সে সম্পর্কে সত্যবাদী হোন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট ইতিমধ্যেই আইসিইউতে পৌঁছে গেছে।’

আইএইচএস/আরআইপি