ক্যাম্পাস

আমি খুবই লজ্জিত, জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি : ড. জাফর ইকবাল

‘যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ দেয় ওই ছাত্রদের আমি শিক্ষক সেই জন্য লজ্জিত, জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি। নবীন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং দেয়ার অপরাধ তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে, শাস্তি দেয়া হয়েছে। সেই শাস্তিটা গ্রহণ করে ওদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না করে তারা আন্দোলন করা শুরু করেছে এবং বিশ্বদ্যিালয়ের বাকি ছাত্রদের কষ্ট দিচ্ছে।

Advertisement

শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শুধু তাই না, তারা শিক্ষকদের সঙ্গেও বেয়াদবি করেছে। এতে আমি খুবই লজ্জা পাচ্ছি যে এই ঘটনা আমাদের ক্যাম্পাসে ঘটেছে। আমি যে বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক, আমি যে ছাত্রদের পড়াই, সেই ছাত্ররা যে এই কাজ করতে পারে এজন্য আমি খুবই লজ্জিত। জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই কাজ করেছে, তাদের যে শাস্তি দেয়া হয়েছে সেই শাস্তিটা আসলে খুবই কম শাস্তি হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া দরকার ছিল এবং রাষ্ট্রীয় আইনে তাদেরকে বিচার করার দরকার ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন এই ধরনের কুৎসিত আন্দোলনের কাছে মাথা না নোয়ায় এবং শাস্তি বহাল রাখে। তাহলে এই ধরনের সমস্যা কমে যাবে। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় র্যাগিং খুব ভালো জিনিস বলে এর পক্ষেও কথা বলছে। তা দেখেও আমি খুব লজ্জিত।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছয় নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় গত বুধবার একই বিভাগের দুই জনকে আজীবন বহিষ্কারসহ আরও তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় সিন্ডিকেট। এছাড়া আরও ১৪ জনকে বিভিন্ন মাত্রায় জরিমানা করা হয়। আজীবন বহিষ্কারাদেশের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্ত্বরের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছিল ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

পরবর্তীতে একই দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে প্রধান ফটক বন্ধ করে আন্দালন শুরু করে তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। শিক্ষকদের প্রবেশ করতে দিলেও শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়নি আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভিসি ভবসের সামনে অবস্থা নেয়। সেখানে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে রাত ৯টায় সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।

আব্দুল্লাহ আল মনসুর/এমএএস/পিআর