দেশজুড়ে

জাহাঙ্গীরের ঘটি গরম ভাজা

মাথায় লম্বা লাল টুপি। পরনে কয়েক রঙের সিট কাপড় দিয়ে তৈরি জামা ও পায়জামা। পায়ে সাদা কেটস। বাম কাঁধে ঝোলানো ঝুঁড়ি।ডান হাতে ঝুমুর ও পেছনে ব্যাগ। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এমন বেশভূষা জাহাঙ্গীর আলমের। নাম জাহাঙ্গীর আলম হলেও এখন ঘটি গরম বা পাগলা ভাজা নামেই পরিচিত তিনি। বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের ভালাইন গ্রামে।

Advertisement

এক সময় ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন জাহাঙ্গীর। সেখানে পরিচয় হয় ঘটি গরম ভাজার ওস্তাদ কুষ্টিয়ার ফারুক উদ্দিনের সঙ্গে। তার পরামর্শে তিনি এ ব্যবসায় আসেন। এরপর চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে এসে এ ব্যবসা শুরু করেন।

তিনি জানান, গত ৮ বছর থেকে নওগাঁ, নাটোর, রাজশাহী, হিলি, পাঁচবিবি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঘুরে ঘটি গরম ভাজা বিক্রি করছেন। নওগাঁয় সপ্তাহে তিন দিন, রাজশাহীতে মাসে দুই দিন, নাটোরে মাসে তিন দিন ও হিলিতে দুই দিন। হিলি পাঁচবিবি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রেনে যাতায়াত করেন।

ঘটি গরম বা পাগলা ভাজার উপকরণ হচ্ছে- নিমকি, চানাচুর, চিড়া ও বাদাম। ১০০ গ্রাম ভাজা ২০ টাকা ও ২৫০ গ্রামে ৪০ টাকা। বাড়ি থেকে নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে নেমে কাঁধে ঝুঁড়ি নিয়ে হেঁটে হেঁটে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। ঝুঁড়ি এবং পেছনে ঝোলানো ব্যাগে প্রায় ২৪ কেজির মতো ভাজা থাকে। ভাজা গরম ও মচমচে রাখতে ঘটিতে করে কয়লা জ্বালিয়ে রাখা হয়। সারাদিন ভাজা বিক্রির পর সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে ফিরে যান।

Advertisement

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দিন শেষে ভাজা বিক্রি করে প্রায় ৪০০-৫০০ টাকা লাভ থাকে। সারা বছরই ভাজা করেন। এ ব্যবসার ওপর দিয়ে চার সদস্যের ভরণপোষণ চলে। বড় মেয়ে জাকিয়া সুলতানা (১৪) হাফেজ ও ছোট মেয়ে ফাতেমা দুই বছর বয়স। ভাজা তৈরির কাজে স্ত্রী সহযোগিতা করেন। আর এ ব্যবসা করেই গত দুই বছর আগে দুই বিঘা ফসলি জমি বন্ধক নিয়েছি। আল্লাহর রহমতে ভালোই চলছে।

আব্বাস আলী/বিএ