মন্তাজ আলী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। একাত্তরে জীবন বাজি রেখে ৫নং সেক্টরের অধীনে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাক হানাদারদের পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছিলেন স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। তবে জীবন যুদ্ধের শেষ সময়ে এসে অভাবের কাছে হার মেনেছেন জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান।
Advertisement
৭৭ বছর বয়সী মন্তাজ আলীর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে। গত কয়েক মাস ধরেই শয্যাশায়ী তিনি। ভিটে-মাটি বিক্রি করে যতটুকু পেরেছেন চিকিৎসা করিয়েছেন পরিবারের লোকজন। অর্থের অভাবে আর চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না তারা। স্থানীয় এক সাংবাদিক বিষয়টি সরাইল সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকিরকে জানান। এরপর ওই পুলিশ কর্মকর্তা মন্তাজ আলীর বাড়িতে তাকে দেখতে গিয়ে চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মন্তাজ আলীর স্ত্রী জোসনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রতি মাসে মন্তাজ আলী ১০ হাজার টাকা সরকারি ভাতা পান। চিকিৎসা করানোর জন্য এখন বিক্রি করার মতো আর কিছুই নেই। সরকারি একটি খালে মাটি ফেলে ছোট্ট একটি ঘর বানিয়ে আমরা বসবাস করছি। পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান ফকির বাড়িতে দেখতে গিয়ে ওনার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।
মন্তাজ আলীর ছেলে শাহ্ আলম জাগো নিউজকে জানান, সর্বশেষ চিকিৎসক বাবাকে কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা দিয়েছিলেন। বোন জামাইয়ের দেয়া একটি মোবাইল ফোন ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে পরীক্ষাগুলো করিয়েছিলাম। এখন আর পারছি না। আমরা দুই ভাই একজন দর্জি ও আরেকজন বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাই।
Advertisement
সরাইল সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকিরের তৎপরতায় এখন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন মন্তাজ আলী। চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা তাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মনিরুজ্জামান ফকির জাগো নিউজকে বলেন, অর্থের অভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা না হওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মুক্তিযোদ্ধার প্রতি আমার দায়িত্ববোধ থেকেই চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রয়োজনে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো হবে।
আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/জেআইএম
Advertisement