ক্যাম্পাস

জাতিসংঘে বাংলার দাবিতে ভোট দিলেন বিদেশিরাও

বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের ৭ম দাপ্তরিক ভাষা করার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ভোটিং ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ‘জাতিসংঘে বাংলা চাই’ দাবিতে চলছে ভোটগ্রহণ। এ নিয়ে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Advertisement

দেশের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহযোগিতায় ও জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম-এর আয়োজনে দেশব্যাপী চলছে ‘জাতিসংঘে বাংলা চাই’ অনলাইন ভোটিং কার্যক্রম।

এরই অংশ হিসেবে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন থেকে শহীদ মিনার অভিমুখে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহীদ মিনারে সমাবেশ ও অনলাইনে ভোটিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় জাতিসংঘের ৭ম দাপ্তরিক ভাষা বাংলার দাবিতে বিদেশি শিক্ষার্থীরাও ভোট দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহার নেতৃত্বে পদযাত্রাটি প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

Advertisement

জাগো নিউজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফেরদাউসুর রহমান সোহাগের সঞ্চালনায় আবৃত্তি সংগঠনের সদস্য রিফার একুশের কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ।

শুরুতেই ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহা।

তিনি জাতিসংঘে বাংলার দাবিতে জনমত গঠনে অনলাইন ভোটিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় জাতিসংঘে বাংলাকে ৭ম দাপ্তরিক ভাষা করার দাবিতে ভোট দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোমালিয়ান শিক্ষার্থী ইব্রাহিম এবং হামজা।

এতে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের নেতা অধ্যাপক মামুনুর রহমান, অধ্যাপক মেহের আলী, অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন আজাদ, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাকী বিল্লাহ বিকুল, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর সাজ্জাদ হোসাইন, আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদুর রহমান টিটু ও প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল প্রমুখ।

Advertisement

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম, ছাত্রলীগ নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ সজল, ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, ছাত্র মৈত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোর্শেদ হাবিব, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রউফ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসাইন রুদ্র, সাধারণ সম্পাদক আসিফ খান ও বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফারুক।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহা বলেন, আমি প্রথমে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি জাগো নিউজকে। তারা এত সুন্দর, সাবলীল ও খুবই পরিশীলিত কর্মসূচির মাধ্যমে জাতিসংঘে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা করার দাবি জানিয়েছে। আমি ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সবাই জাগো নিউজের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। আমি জাগো নিউজের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি জাতিসংঘের মহাসচিবসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে দাবি জানাচ্ছি বাংলাকে জাতিসংঘের ৭ম দাপ্তরিক ভাষা করা হোক। দাবির পক্ষে যুক্তি হলো- একমাত্র বাংলা ভাষারই রয়েছে রক্তাক্ত ইতিহাস। এ কারণেই ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ বাংলাকে তাদের অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ করলে পৃথিবীর সব ভাষার প্রতি সম্মান জানানো হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হওয়ার সব ধরনের যোগ্যতা বাংলা ভাষার রয়েছে। মানবজাতির সর্ববৃহৎ সংগঠনটি বাংলা ভাষাকে দাপ্তরিক ভাষা করলে ২০ মিলিয়নেরও বেশি মানবগোষ্ঠীর মুখের ভাষার প্রতিনিধিত্বের মূল্যায়ন হবে।

ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এএম/জেআইএম