পর পর তিন বছর লোকসান গুণতে হচ্ছে মাগুরার পাট চাষিদের। জেলার বাজারগুলোতে পাটের দাম এখনো নিম্নমুখী। পাট বিক্রি করে কৃষকরা তাদের উৎপাদন খরচ পর্যন্ত উঠাতে পারছেন না। ফলে পাটের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন চাষিরা। সদর উপজেলার আঠারোখাদা, কাঁশিনাথপুর, নিজনান্দুয়ালীসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। কৃষকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে একজন দিনমুজুরের দৈনিক হাজিরা ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা। এক বিঘা জমির পাট কেটে তা জাগ দিয়ে শুকিয়ে ঘরে তুলতে যে পরিমাণ দিনমজুর লাগে তাতে আগের খরচ মিলিয়ে মণ প্রতি পাটের দাম পড়ে যাচ্ছে এক হাজার টাকার উর্ধ্বে। অথচ বর্তমানে প্রতি মণ পাটের বাজার মূল্য এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা । যে কারণে উৎপাদন খরচ ও বাজার মূল্য প্রায় একই রকম হওয়ায় তারা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। জেলায় এ বছর প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। প্রথম দিকে অনাবৃষ্টির কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে বৃষ্টির কারণে সে সংকট কাটিয়ে পাটে বাম্পার উৎপাদন আশা করছেন কৃষকরা। বিভিন্ন এলাকা ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাটের দাম নিয়ে প্রত্যেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে । কৃষক হুসাইন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, যেহেতু পাট চাষে বিঘা প্রতি হাজার টাকার উর্ধ্বে খরচ এ কারণে অবশ্যই পাটের দাম ২০০০ টাকার উর্ধ্বে হওয়া উচিত। তানা হলে আগামীতে পাট চাষ কমে যাবে । পাটের ন্যায্য দাম না পাওয়ার কারণ হিসেবে বাজারে সরকারি অর্থের ব্যাপক যোগান না থাকাকে দায়ী করেছেন মাগুরার পাট ব্যবসায়ীরা। মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পার্থ প্রতিম সাহা জাগো নিউজকে জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো মাগুরায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর জেলায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কবে এর চেয়ে ২ ভাগ জমিতে পাট উৎপাদন বেশি হয়েছে। তিনি আরো জানান, মাগুরার মাটি পাট চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত পাটের রং ও সাইজ খুব ভালো হয়। কিন্তু বাজার ব্যবস্থার উন্নতি করা না হলে ও পাট চাষিরা পাটের ন্যায্য মূল্য না পেলে পরবর্তীতে পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। মো. আরাফাত হোসেন/এসএস/পিআর
Advertisement