বিনোদন

তবে বিদায় বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার

আর হাসবেন না শ্রীদেবী, আর বলবেন না কোনো কথা কিন্নরী সুরে চারপাশ মুগ্ধ করে। আর কখনো চোখের নাচন নিয়ে পুরুষের বুকে জাগাবেন না হাহাকার জাগানিয়া প্রেম। এইসবকিছুর বাইরে এখন তিনি। উপমহাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে চিরকালের মতো পৃথিবী নামক গ্রহ ছাড়লেন অনিন্দ্য সুন্দরী অভিনেত্রী শ্রীদেবী। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

Advertisement

বলিউড নামক আকাশে শ্রীদেবী এক মহানক্ষত্রের নাম। নানা কারণেই তিনি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন হিন্দি সিনেমার সাম্রাজ্যে। সবচেয়ে বড় কারণটি বলা যেতে পারে নারীদের অনুপ্রেরণার জন্য। শ্রীদেবী ছিলেন বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার। বলা হয়ে থাকে, এর আগে বলিউডে সুপারস্টার শব্দগুলো বরাদ্দ ছিলো শশী কাপুর, দীলিপ কুমার, ধর্মেন্দ্র, রাজেশ খান্নাদের জন্যই।

শিশুশিল্পী শ্রীদেবী ১৯৭৬ সালে দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে নায়িকা হয়ে হাজির হয়েই বাজিমাত করে দিলেন। তার সৌন্দর্য্য, আকর্ষণীয় ফিগার, মধু ছড়ানো কণ্ঠ, বিজলীর মতো চোখের পলক মাতিয়ে দিলো ভারত। সেই মাতানোর হাত ধরেই ১৯৭৯ সালে নাম লেখালেন বলিউডে। তারও চার বছর পর জিতেন্দ্রর নায়িকা হয়ে হৈ চৈ ফেলে দিলেন শ্রীদেবী ‘হিম্মতওয়ালা’। এই ছবিটিই শ্রীদেবীকে স্টার বানিয়ে দিলো বলিউডে। বাকী সময়টুকু গড়েছেন ইতিহাস। মধুবালা, জিনাত আমান, হেমা মালিনীর মতো দুর্দান্ত সব নায়িকারা তার আগেই সুপারহিট ছিলেন। কিন্তু বলিউডের দাবি, তারা কেউই শ্রীদেবীর মতো পুরুষতান্ত্রিক বলিউডে নারী হিসেবে নিজেদের আলাদা করে মেলে ধরতে পারেননি।

মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে একটা জুটি গড়ে উঠলেও এই প্রথার বাইরে গিয়ে বিভিন্ন সব নায়কদের সঙ্গে শ্রীদেবী উপহার দিয়েছেন সুপারহিট সিনেমা। তার নামেই তৈরি হয়েছে সিনেমা, তার নামেই দর্শক এসেছে হলে। সেই আত্মবিশ্বাসেই শ্রীদেবী পেরেছিলেন শাহরুখ খান-সালমান খানদের মতো নবাগতদের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হতে।

Advertisement

তবে শ্রীদেবীর নামের পাশে সেরা নায়ক হিসেবে থেকে যাবে তারই দেবর অনিল কাপুরের নাম। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে করা ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবিটিতে রিপোর্টার চরিত্রে শ্রীদেবী বাজিমাত করে দিয়েছিলেন। অনেকেরই মতে, সুন্দরী শ্রীদেবী অভিনীত শ্রেষ্ঠ চরিত্র এটিই।

এমন নায়িকার প্রয়াণ শুধু প্রয়াণ নয়, এ বিশাল শূন্যতার জন্ম দিয়ে যাওয়া মহাপ্রস্থান। তবে শ্রীদেবীর যাত্রাটা হয়ে গেল হুট করেই। কোনো আভাস ছিলো না। যার সৌন্দর্যে পৃথিবী কেঁপেছে, ৫৪ বছর তার চলে যাবার জন্য আদর্শ বয়স নয়। তবুও মানতে হয়। মৃত্যু কোনো যুক্তি মানে না, আবেগ শুনে না। চলে গেছেন শ্রীদেবী এটাই সত্যি কথা।

শ্রীদেবীকে হারিয়ে কাঁদবে বলিউড, কাঁদবে কোটি কোটি ভক্তরা; এ খুবই স্বাভাবিক। যেখানেই থাকা হোক, শান্তিতে থাকুন শ্রীদেবী। আমরা থেকে যাবো তার সৌন্দর্য আর মুগ্ধতা ছড়ানো অভিনয়ের স্মৃতি বুকে নিয়ে।

এলএ/পিআর

Advertisement