ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বিএনপির ‘নতুন জ্যোতিষী’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
Advertisement
শুক্রবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা সফল করতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বড় বড় কথা বলেন মওদুদ আহমেদ। তিনি দেশের রাজনীতির বহুরূপী নেতা, ডিগবাজিতে ওস্তাদ। তিনি এখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যাচ্ছেন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, না আস্তে আস্তে অশান্তির ক্ষেত্র তৈরি করছেন? শান্তির কথা বলে জনগণের সহানুভূতি পেতে চান? দেশের মানুষ আপনাদের দুর্নীতির পক্ষে না।
তিনি বলেন, মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘বেগম জিয়া জেলে থাকলে দৈনিক বিএনপির ১০ লাখ ভোট বাড়ে, আওয়ামী লীগের ১০ লাখ ভোট কমবে।’ এতদিন জানতাম ফখরুল ইসলাম আলমগীর জ্যোতিষ বিদ্যা রপ্ত করেছেন। জানতাম, বিএনপিতে সংখ্যাতত্ত্বের হিসাব একমাত্র ফখরুলই দেন। একবার বলেন আওয়ামী লীগ ২৫ সিট পাবে, আবার বলে ৩০ সিট পাবে। এইভাবে আগামী নির্বাচনের সংখ্যাতত্ত্ব মিলিয়ে দিচ্ছেন।
Advertisement
সেতুমন্ত্রী বলেন, ভোট দেবে জনগণ, আর জ্যোতিষ ফখরুল একেকবার একেক সংখ্যাতত্ত্ব দিচ্ছেন। এখন দেখি, মওদুদ আহমদও নেমেছেন নতুন জ্যোতিষী হিসেবে। তিনি এখন মাঠে নেমেছেন। ভোট বাড়ার হিসাব দিচ্ছেন। প্রমাণ আছে? আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহীর জনসভায় এর প্রমাণ দেখিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দুর্নীতিবাজের পক্ষে জনসমর্থন বাড়ে না। উল্টো প্রতিদিন আওয়ামী লীগের ১০ লাখ ভোট বাড়ছে আর দুর্নীতির জন্য বিএনপির ১০ লাখ করে ভোট কমছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তৃণমূলের কর্মীরাই আওয়ামী লীগের প্রাণ। এ তৃণমূলের কর্মীবাহিনী আছে বলেই আওয়ামী লীগ টিকে আছে। এ কর্মীরা কখনো আপোষ করেনি, মাথা নত করেনি। যার প্রমাণ ১/১১। সেদিন কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল বলে মাইনাস টু ফর্মুলার চক্রান্ত বাস্তাবায়ন হয়নি। সুসময় আমাদের জীবনে খুব বেশি সময়ের জন্য আসেনি। ক্ষমতায় থেকেও আমরা যে সুসময়ে আছি, এ কথা দাবি করার কোনো অবকাশ নেই। এখনও মাঝে মাঝে দুঃসময় আসে।
তিনি বলেন, এখনও সংকটমুক্ত তা বলা যাবে না। এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। তবে এ সময়ে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অর্জনে, তার সততা ও কর্মঠ নেতৃত্বে এতটাই খুশি যে, সারাদেশের মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ। যে কারণে জঙ্গিবাদী শক্তি অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। পুলিশ র্যাব ও সেনাবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে নিয়ন্ত্রিত ও দুর্বল। কিন্তু তারা তাদের পথ থেকে সরে যায়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার কাছে প্রতি মুহূর্তেই মনে হয়, আজকের জঙ্গিবাদী শক্তি তলে তলে আরও ভয়াবহ আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে কি-না, এটা ভাবতে হবে। বিরোধী শক্তি তাদেরই বন্ধু ও দোসর। তারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছে। এর কোনো ইতিহাস নেই। বিচার বিভাগের একটা রায়কে কেন্দ্র করে যেভাবে তারা তাণ্ডব চালাচ্ছে। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের দূতাবাস ভাংচুর করেছে। তারাই হাইকোর্টের সামনে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়েছে। তারা যখন বলে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এটা বিশ্বাস হয়?
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা আরও সতর্ক। রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আগের চেয়েও তৎপর। যে কারণে এ অপশক্তি সাহস পাচ্ছে না, আগের মত ঘটনা পুনারাবৃত্তি ঘটাবার। এজন্য কৌশল নিয়েছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের। তারা কি শান্তি চায়? তাদের আগুন সন্ত্রাস মনে আছে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, দু-তিনটা স্বভাবজাত মিথ্যাবাদী আছে বিএনপিতে। এদের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। বেরুলে জনগণ ধরবে। এরা ঘরে বসে ভাঙা রেকর্ড বাজায়, দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র না থাকলে ফখরুল, মওদুদ ও রিজভীরা যেভাবে আদালতকে ‘প্রতারক’ বলছে? তাদের কেউ কিছু বলছে না। আমরাও বলেছি, ওরা যত বেশি কথা বলবে বিএনপির ভোট তত কমবে। এজন্য তারা অন্যায় করুক, অপরাধ করুক, যতবেশি বাজে কথা বলুক, এদের গ্রেফতারের দরকার নেই। এদের বাজে কথাগুলো জনগণ থেকে বিএনপিকে আরও দূরে সরিয়ে দেবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
এইউএ/এএইচ/আইআই