বজরঙ্গী ভাইজানের আলোড়ন কেবল পর্দা কাঁপাতে আর মানুষের আবেগকে উসকে দিয়ে অশ্রু বিসর্জন করানোয়! এমনকি সতীর্থের মনোমুগ্ধকর ছবি দেখে কেঁদেছেন আমির খানও। সিনেমার বজরঙ্গী ভাইজান সালমান কামিয়েছেন আরো নাম-ধাম, আর বলাই বাহুল্য অর্থযোগও হয়েছে তার। ছোট্ট হারশালি শর্মাও হয়েছেন শতাব্দীর সেরা আবিষ্কার।তবে পর্দার তারকা নয় বাস্তবের বজরঙ্গী ভাইজানের দেখা মিলেছে। তার সামনে ছিল না কোন চিত্রনাট্য৷ ছিল না ভাইজানের মতো পর্দার নায়ক হয়ে ওঠার হাতছানি৷ মেলোড্রামার সহায়তা নিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার সুযোগ ছিলন না তার সামনে৷ তবু তিনি তা করেছেন৷ তিনি পুলিশ অফিসার সঞ্জীব মিশ্র৷ এক ধর্ষিতা নাবালিকাকে যিনি বাঁচিয়ে তুলেছেন নিজের উদ্যোগে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় তার কথা জানিয়েছেন নভনীত শিকারা নামে এক ব্যক্তি৷ বারাণসীর ফুলপুর থানায় ডিউটিতে থাকাকালীন অফিসারের কাছে খবর আসে পাশের এলাকায় এক নাবালিকা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় পড়ে আছে৷ ঘটনাচক্রে সেই এলাকা ওই অফিসারের থানার আওতায় পড়ে না৷ কিন্তু কাগজ কলমের জটিলতায় নিজেকে আটকে রাখেননি সঞ্জীব৷ তৎক্ষণাৎ গিয়ে উদ্ধার করেন বাচ্চাটিকে৷ নিয়ে যান কাছাকাছি এক হাসপাতালে৷ খোদ পুলিশ অফিসার সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতাল বাচ্চাটিকে প্রথমে ভর্তি নিতে চায়নি৷ অন্য একটি হাসপাতালে গিয়েও একই ব্যবহার পান তিনি৷ সরকারি হাসপাতালের সাহায্যের মোহ ছেড়ে তিনি বাচ্চাটিকে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করান৷ কিন্তু প্রাইভেট হাসপাতালের খরচ কে বহন করবে? সঞ্জীব কোন দ্বিধা না করে নিজেকে বাচ্চাটির অভিভাবক হিসেবে পরিচয় দেন৷ এবং সমস্ত খরচ বহন করার সিদ্ধান্ত নেন৷পরে জানা যায়, বাচ্চাটিকে এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি ধর্ষণ করে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল৷ সে ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে৷ নভনীতের এ পোস্ট জনসমক্ষে আসার পর থেকেই সারা ভারতের মানুষ কুর্নিশ জানিয়েছেন ওই পুলিশ অফিসারকে৷ রাজনীতির অনেক উর্ধ্বে উঠে তিনি যে নমুনা স্থাপন করেছেন, তা সত্যিকারের এক মানুষের দৃষ্টান্ত৷ এই মুহূর্তে সারা দেশে শোরগোল ফেলে দিয়েছে সালমন খানের ‘বজরঙ্গি ভাইজান’৷ কিন্তু সব নিষ্পাপ ‘মুন্নি’রা তো পাশে সিনেমার নায়ককে পায় না৷ তবু কেউ কেউ পায় সঞ্জীব মিশ্রর মতো মানুষকে৷ পর্দায় নয়, যিনি বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা এক হিরো, এক সত্যিকারের ভাইজান৷ এসএইচএস/এমআরআই
Advertisement