একুশে বইমেলা

আত্মপ্রচারের আগে আত্মপ্রসার ঘটানো জরুরি

‘শিল্প-সাহিত্যের বিকাশ হচ্ছে আত্মচেতনার ফসল। লেখকরা তার অন্তরের উপলব্ধি লেখার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করে থাকেন। আর এই প্রকাশ যদি সংকীর্ণ আয়োজনে হয়, তাহলে শিল্পমান দাঁড়ায় না। এ কারণেই আত্মপ্রচারের আগে আত্মপ্রসার ঘটানো জরুরি।’ বলছিলেন, প্রবীণ লেখক, প্রাবন্ধিক যতীন সরকার। বইমেলার আয়োজন, লেখার সাহিত্যমান নিয়ে জাগো নিউজ-এর কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এই লেখক। বইমেলার আয়োজনকে এখন বেশ পরিপাটি উল্লেখ করলেও বইয়ের মান নিয়ে হতাশাই প্রকাশ করেন।

Advertisement

যতীন সরকার বলেন, মেলার বিস্তৃতি ঘটছে দিনে দিনে। এ বছর আরও সুন্দর কাঠামোয় মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলা নিয়ে গণমাধ্যমও উচ্ছসিত। বইমেলায় প্রতিদিন শত শত বই প্রকাশিত হচ্ছে। লেখকের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। মানুষ সাহিত্য চর্চা করছে। এটি ভালো সংবাদ। কিন্তু সাহিত্যের মান নিয়ে তো প্রশ্ন উঠছে। এ অভিযোগ তো অস্বীকার করার উপায় নেই। সাহিত্যের মান যে কমছে, তা যে কেউই বলতে পারেন।

বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি না মনে করে লেখক বলেন, একটি ভালো সৃষ্টিই সব অর্জন মেলে ধরতে পারে। সাহিত্য চর্চা আত্মপ্রচারের নিয়ামক বটে। কিন্তু সে আত্মপ্রচারের আগে আত্মপ্রসার ঘটানো জরুরি।

সাহিত্যমানে কেন ঘাটতি দেখা দিয়েছে-এর জবাবে তিনি বলেন, মানুষের চিন্তার ক্ষেত্র দুর্বল থেকে দুর্বল হচ্ছে। এর পেছনে রাজনীতি, বিশ্ব রাজনীতি দায়ী। দায়ী বিশ্ব অর্থব্যবস্থাও। টিকে থাকাই যেন দায়। এটি ঠিক সাহিত্যের ক্ষেত্রেও। ভাষা-সাহিত্য বিকাশ এবং উন্নয়নে সবারই দায়িত্ববান হতে হবে। চিন্তার জগৎ আরও প্রসারিত করতে হবে।

Advertisement

জীবনের এবেলায় বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উন্নয়ন নিয়ে কতটুকু আশাবাদী- এমনটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো ভাষার ইতিহাস থেকে ঠিক শিক্ষা নিতে পারিনি। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গভীর কোনো চিন্তার প্রতিফলন দেখতে পাইনি। খানিকটা জোড়াতালি দিয়েই শিক্ষার বিস্তার ঘটছে। তবুও আশাবাদী এ কারণে যে আমাদের তরুণরা শিখতে চায়, জানতে চায়। হয়ত এই চাওয়ার মধ্য দিয়েই একদিন ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

এএসএস/এমআরএম/জেআইএম