কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) জমা দেয়া প্রস্তাব পর্যালোচনা করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
Advertisement
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদকে আহ্বায়ক করে গঠন করা এ কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়েছে মাহবুবুল আলমকে। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- ড. এটিএম তারিকুজ্জামান ও আনোয়ারুল ইসলাম। কমিটির বকি সদস্যরাও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ডিএসইর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে বিএসইসিতে কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দেয় ডিএসইসি। ডিএসইর পক্ষে এ প্রস্তাব জমা দেন প্রতিষ্ঠানের সেক্রেটারি মো. আসাদুর রহমান। ওই প্রস্তাব জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রস্তাব পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করলো ডিএসই।
Advertisement
২০১০ সালে পুঁজিবাজারে মহাধসের পর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বাড়াতে স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা আলাদা করতে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট ২০১৩ করা হয়। কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ছাড়াও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিক বিবেচনায় কৌশলগত অংশীদার নেয়া এবং তাদের জন্য মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়। আর সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো বা ব্রোকারেজ মালিকরা স্টক এক্সচেঞ্জটির ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় থাকবেন। বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার পরবর্তীতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করতে হবে।
পরবর্তীতে কৌশলগত বিনিয়োগকারী নেয়ার জন্য ২০১৫ সালে এক বছর সময় দিয়ে চিঠি ইস্যু করে বিএসইসি। পরে ছয় মাসে করে আরও দুই বার সময় বাড়িয়েছে কমিশন। যা আগামী ৮ মার্চ শেষ হচ্ছে।
এমন পরিস্থীতিতে চীনের সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, নাসডাক এবং ফ্রন্টিয়ার মিলে গঠিত কনসোর্টিয়াম ডিএসইর শেয়ার কেনার প্রস্তাব দেয়।
দুই কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসইর পর্ষদ সভায় ভারতকে বাদ দিয়ে শুধু চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকেই কৌশলগত বনিয়োগকারী করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই বিএসইসির অনুমোদন পেতে বৃহস্পতিবার প্রস্তাব জমা দেয়া হয়।
Advertisement
ডিএসই সূত্র জানায়, সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেনজেন কনসোর্টিয়াম ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। এ জন্য কনসোর্টিয়ামটি ডিএসইর প্রতিটি শেয়ারের দাম দিতে চেয়েছে ২২ টাকা। এর পাশাপাশি ডিএসইকে ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কারিগরি সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেনজেন কনসোর্টিয়াম।
আর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ার আগ্রহ দেখিয়ে ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফন্ট ইয়ার বাংলাদেশ ও নাসডাক কনসোর্টিয়াম ডিএসইর ২৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ার কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। এ জন্য কনসোর্টিয়ামটি ডিএসইর প্রতিটি শেয়ারের দাম দিতে চেয়েছে ১৫। পাশাপাশি কারিগরি সহায়তাদের দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে কি পরিমাণ কারিগরি সহায়তা দেবে, সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য টেন্ডারে উল্লেখ করেনি।
ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারীর টেন্ডারে অংশগ্রহকারীদের দরপতন ওপেন করা হয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি। টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে শেয়ারের সর্বোচ্চ দর এবং কারিগরি সহায়তার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আর্থিক প্রস্তাব দেয়ায় ডিএসই পর্ষদ ওই দিনই চীনের দুই প্রতিষ্ঠান সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেনজেন কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এমএএস/এএইচ/আইআই