বিনোদন

আজ কান্নার রোল উঠলো রুপুর বাড়িতে

একদিন কান্নার রোল উঠবে আমার বাড়িতে, আমায় নতুন করে দেখতে সবাই আসবে সারি সারিতে, বন্ধু বান্ধব আসবে যারা কতো প্রশ্ন করবে তারা, আমি থাকবো শুয়ে বালিশ ছাড়া, পারবো না ঠোঁট নাড়িতে- নকুল কুমার বিশ্বাসের লেখা এই গানটি গেয়েছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ।

Advertisement

মৃত্যুকে মনে করিয়ে দেয়া এই হৃদয়গ্রাহী গানটির সুরকার ছিলেন আলী আকবর রুপু। আজ সত্যি তার বাড়িতে কান্নার রোল উঠেছে। তাকে শেষ দেখা দেখতে সারি সারিতে লোক ভিড় করছেন। রুপু কী চেষ্টা করছেন তার ঠোঁট নাড়ানোর? কে জানে! অন্য ভুবনের বাসিন্দা হয়ে যাওয়া মানুষ সম্পর্কে কিছু জানতে পারি না এ ভুবনের আমরা।

তবে এটুকু বলে দেয়া যায়, রুপু বেঁচে থাকবেন তার গানে, প্রিয় মানুষদের স্মৃতিচারণে। আজ বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) না ফেরার দেশে চলে গেছেন গানটির সুরকার আলী আকবর রুপু। তাকে নিয়ে ভাবছেন, লিখছেন শোবিজের মানুষেরা। তারকাদের ফেসবুকের স্ট্যাটাসজুড়ে আজ শোক।

রুপুর মামা সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী বললেন, ‘১৯৫৮ সালের রুপুর মা আমার মেজ বোন জামিলা মনসুরের বিয়ের পরে রুপুর জন্ম। আমাদের কোলে পিঠে বড় হলো সে। এর মধ্যে কতটুকু সময় গেল? আল্লাহ রুপুকে তার মায়ের সাথে বেহেস্তে স্থান দিও।’

Advertisement

শোকাহত সংগীতপ্রেমীরা ফেসবুকে শোক প্রকাশ করেছেন। সংগীত বিষয়ক নানা সংগঠনও শোক প্রকাশ করেছে। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বাপ্পা মজুমদার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘রুপু ভাইও চলে গেলেন!’

প্রিয় এই মানুষটির মৃত্যু যেনো মেনে নিতে পারছেন না কেউ। সুবর্ণা মুস্তাফা লিখেছেন, ‘কি যে হচ্ছে একটার পর একটা ঘটনা... তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’ শম্পা রেজা বলেন, ‘রুপু এক চমৎকার মানুষ ছিলেন। শুভ হোক তার আত্মার নতুন যাত্রা।’

সংগীত পরিচালক আলি আকরাম শুভ নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘ভাই, আপনি যান, শান্তিতে ঘুমান। আমিও দ্রুত আসছি।’ কবির বকুল লিখেছেন, ‘রুপু ভাই, আর কোনোদিন আপনার সঙ্গে গান নিয়ে আমার বসা হবে না। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন আপনি।’

হানিফ সংকেত লিখেছেন, ‘আলী আকবর রুপুর এই অকাল মৃত্যুতে আমাদের সংগীতাঙ্গনের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। আমরা তার বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

Advertisement

নন্দিত গীতিকবি মোহাম্মাদ রফিকউজ্জামান লিখেছেন, ‘রূপু, বাবা, আমি তোমাকে মিথ্যে সান্তনা দিয়েছিলাম।গান নিয়ে আর কোনোদিনই বসা হবে না বাবা-ছেলে মিলে। কী সান্তনা দেবো আমি, বৌমাকে, তোমার সন্তানদেরকে? নিজেকেই যে সান্তনা দিতে পারছি না। কী করে বিশ্বাস করবো তুমি নেই..... তুমি আর নেই......!’

প্রসঙ্গত, অনেকদিন ধরেই ডায়াবেটিস, হার্ট ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন আলী আকবর রুপু। হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গেল শুক্রবার তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্ট্রোক হলে বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ব্যক্তিজীবনে আলী আকবর রুপু ছিলেন সুখী মানুষ। স্ত্রী নারগিস আকবর, পুত্র সিডনি ও একমাত্র মেয়ে ফারিয়া নাজকে নিয়ে ছিলো তার সুখের সংসার। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বাস করছিলেন মগবাজারের ডাক্তারের গলিতে।

এমএবি/এলএ/জেআইএম