বিশ্ব বাজারে দরপতনের কারণে দেশের বাজারেও বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণের দাম কমনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) থেকে সারাদেশে স্বর্ণের এই নতুন দর কার্যকর হবে। বুধবার বাজুস-এর একটি সূত্রের মাধ্যমে বিষয়টি জানা গেছে।নতুন দর অনুযায়ী বাংলাদেশের বাজারে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম কমেছে ২২ ক্যারেটে এক হাজার ৫৪০ টাকা, ২১ ক্যারেট এক হাজার ৫৩৯ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের দাম এক হাজার ৫৪০ টাকা।সূত্রটি জানায়, বহির্বিশ্বে স্বর্ণের দাম কমায় বাজুস তাদের সদস্যভুক্ত প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে বৃহস্পতিবার থেকে স্বর্ণের দাম কমানোর বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে।নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২২ ক্যারেট ৪২ হাজার ৯৮১ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪০ হাজার ৮৮২ এবং ১৮ ক্যারেট ৩৪ হাজার ২৩৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির সোনা ২২ হাজার ৮৬১ টাকা ভরি। প্রতি ভরি রূপার দাম ৯৯১ টাকা।পূর্বের মূল্য প্রতি ভরির দাম ছিল ২২ ক্যারেট ৪৪ হাজার ৫২১ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪২ হাজার ৪২১ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের দাম ৩৫ হাজার ৭৭৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির সোনা ২৪ হাজার ৮৬ টাকা ভরি। প্রতি ভরি রূপার দাম এক হাজার ৫০ টাকা।এদিকে স্বর্ণের দাম কমানোর বিষয়ে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের আমিন জুয়েলার্সের বিক্রয় কর্মী সুব্রত কর্মকার জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম অনেক কমেছে। দেশের বাজারে কমানো হয়েছে তা ভালো। মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য হলে আরো কমানো দরকার।তবে দাম কমলে ক্রেতারা ভাবেন আরো কমবে। তাই তারা স্বর্ণ না কিনে অপেক্ষা করতে থাকেন। তখন আমাদের বিক্রি অনেক সময় কমে যায় বলে জানান তিনি।উল্লেখ্য, গত কয়েক দিনে এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে স্বর্ণের দামে নিম্নগামী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, চীনের সাম্প্রতিক স্বর্ণ মজুদের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এশিয়ার নগদ টাকার বাজারে (স্পট) স্বর্ণের আউন্সপ্রতি দাম দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৮ ডলার পাঁচ সেন্ট। ২০১০ সালের ২৬ মার্চের পর গত সোমবারই প্রথমবারের মতো মূল্যবান এ ধাতুর দাম আউন্সপ্রতি এক হাজার ১০০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে।অন্যদিকে বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়াতে পারে। মূলত এ অনিশ্চয়তা থেকে নিরাপদে থাকতে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ বিক্রি করে নগদ অর্থ তুলে নিচ্ছেন। ফলে স্বর্ণের দাম পড়েছে পাঁচ শতাংশ। এটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের সময় থেকেও দুর্বল। শুক্রবার বিশ্বের বৃহত্তম স্বর্ণের ভোক্তা দেশ চীন জানায়, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশটি ৫৭ শতাংশের বেশি স্বর্ণ মজুদ করতে পেরেছে। তবে বিশ্লেষকরা যেমনটি প্রত্যাশা করেছিলেন, তার চেয়ে এই অংক অনেক কম। বর্তমানে চীনের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের এক দশমিক ৬৫ শতাংশ রয়েছে স্বর্ণের মজুদ।তবে ২০০৯ সালের জুনে এর হার ছিল এক দশমিক ৮ শতাংশ। ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জ্যানেট ইয়েলেন গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় এ সংস্থা সুদের হার চলতি বছর বাড়াবে বলে কংগ্রেসকে নিশ্চিত করলে ডলার শক্তিশালী হতে থাকে। এতে স্বর্ণের দরপতন হতে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ান গোল্ড মাইনারসের শেয়ারের দামেও বড় পতন দেখা গেছে। দেশটির বাজারে গত কার্যদিবসের লেনদেনে এর দাম ১৩ শতাংশ কমেছে। আর রেগিস রিসোর্সেস, নর্দার্ন স্টার রিসোর্সেস ও নিউকেস্ট মাইনিংয়ের শেয়ারের দাম গড়ে ৮ শতাংশ কমেছে।# স্বর্ণের দাম ৫ বছরে সর্বনিম্ন# ৭ কারণে কমছে স্বর্ণের দামএসআই/বিএ/এমআরআই
Advertisement