শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার আবহে জেগেছে শাহবাগ। জেগে আছে প্রাণের ঠিকানা শহীদ মিনার। ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত হতে বুক পেতেছে শহীদ বেদীও। ফাগুনের রাত। প্রেমের মানুষেরা ঘরহারা আজ। উদাস বনের মন শহীদ বেদিতে যেতে পাগলপ্রায় যেন।
Advertisement
এদিন সন্ধ্যার পর থেকেই শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোয় একুশের ছোঁয়া লাগে। দীর্ঘ লাইনে ফুল কিনতে দেখা যায় মধ্যরাত পর্যন্তও। ফুল, ফুলের তোরা, ফুলের ডালা তখন মানুষের হাতে হাতে। কখন খুলবে দ্বার? কখন গাইবে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’
ঘড়ির কাঁটায় ১২টা পার তখন। ফাগুনের হাওয়া বইছিল মধ্যরাতেও। ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো আরও বেশি সজাগ এ বেলায়। বাতিগুলোর সঙ্গী এদিন হাজাররো মানুষ। বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা সকলের চোখে-মুখে।
রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানাবেন বলে শহীদ মিনারের আশপাশের এলাকা আটকে দেয়া হয়। কড়া নিরাপত্তায় চাদরে ঢেকে দেয়া হয় শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, টিএসসি আর পলাশী মোড় এসময় নির্দিষ্টরা ছাড়া কেউই প্রবেশ করতে পারে না শহীদ মিনারে।
Advertisement
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষেরা অধীর অাগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে এসব এলাকায়। কেউ স্বজনের হাত ধরে, কেউ বা দল বেঁধে এসেছেন শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে।
মধ্যরাতের অপেক্ষা। তবুও যেন মধুময়। জাতীর শ্রষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে কোনোই কার্পণ্য নেই তাদের মাঝে। কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে গল্প করছেন দেশমাতৃকার নানা প্রসঙ্গ নিয়ে। কেউ অাবার গিটার বাজিয়ে গাইছেন দেশের গান, মুক্তির গান। গানে তাল মিলাছে সকল প্রাণ। সমস্ত অায়োজনই যেন শহীদদেরর প্রতি ভালোবাসার জন্য, রাতের অাঁধার কাটানোর জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র আবরার হোসেন। বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই প্রতি বছর মধ্যরাতে শ্রদ্ধা জানাতে আসি। প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা জানানোর অাবেগই অালাদা। জেগে থাকব সারারাত।
বাংলাদেশ হিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সদস্য রিপা বলেন, দারুণ লাগছে। এমন রাতে ঘরে থেকে অাবেগ প্রকাশ করা যায় না। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমরাও শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি শহীদ মিনারে।
Advertisement
এএসএস/এমএইচ/বিএ