জাতীয়

রোহিঙ্গা সংকট : মিয়ানমারের ওপর ভারতের চাপ কামনা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর ভারতের চাপ প্রয়োগ কামনা করে বলেছেন, বাংলাদেশে তাদের অবস্থান দীর্ঘায়িত হলে জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত নিরাপত্তার ঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে ভারত মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করুক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার রাতে তার সরকারি বাসবভবন গণভবনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৮ উপলক্ষে ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ‘ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আইসিএলডিএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ইন্ডিয়া মিডিয়া ডায়ালগে’ অংশগ্রহণকারী কলকাতা ও দিল্লির সাংবাদিকদের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, আইসিএলডিএস চেয়ারম্যান এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ জমির, আইসিএলডিএস ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, উপদেষ্টা মোজাম্মেল বাবু, আহ্বায়ক শ্যামল দত্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহ্সানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও বিদেশ থেকে আগত সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় বাংলাদেশ-ভারত ও বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন, তিস্তার পানি বণ্টন, যোগাযোগ এবং বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলের ভারতে সম্প্রচার সম্পর্কিত বিষয় উঠে আসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে প্রায় ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে আশ্রয় দিয়েছে। বর্ষার মওসুম ঘনিয়ে আসছে। এ সময় রোহিঙ্গাদের এভাবে রাখা বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদের জন্যও।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ছোট ছোট শিশুরা রয়েছে এবং প্রতিদিনই শিশুর জন্ম এই সংখ্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। পাশাপাশি সেখানে বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ এবং যুবক রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এছাড়াও সেখানে বৈশ্বিক সমস্যা জঙ্গিবাদের উত্থান হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

তিনি বলেন, যখন জনগণের মধ্যে হতাশা এসে পড়ে এবং কোনো কাজ থাকে না তখন তাদের কেউ কেউ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তেই পারে। যদিও আমরা লক্ষ্য রাখছি এ ধরনের কোনো ঘটনা যেন না ঘটে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আমরা ভারতের সহযোগিতা চাই, তারা যেন মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। যদি ভারত মিযানমারকে চাপ অব্যাহত রাখে তাহলে হয়তো তারা তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন যে ৫টি দেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে তাদের সঙ্গে সংলাপ আয়োজনের। যাতে করে তারাও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে পারে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আলোচনাও চলছে এবং নেপিডো ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সম্মত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ভারতও এ ব্যাপারে সক্রিয় যাতে রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের ওপর কোনো নির্যাতনের ঘটনা না ঘটে।

বাংলাদেশ-চীন বর্তমান সম্পর্ক এবং সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের এই বিষয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই কেননা, সকল দেশ বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করছে।

তিনি বলেন, ভারত, জাপান এবং এমনকি মধ্যপূর্ব দেশগুলোও বাংলাদেশে আসছে সহযোগিতার জন্য। আমরা চাই বিনিয়োগ এবং সহযোগিতা- যারাই এ বিষয়ে আগ্রহী হোক। কারণ আমরা দেশকে উন্নত করতে চাই।

এফএইচএস/বিএ