আইন-আদালত

আপিলে খালেদার খালাসের পক্ষে যেসব যুক্তি আইনজীবীদের

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়ের করা আপিলের শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন আদালত।

Advertisement

আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হবে কি-না এ বিষয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে খালেদার আইনজীবীদের উপস্থাপনের পর বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন।

পরে আপিলে খালেদা জিয়ার খালাসের পক্ষে তার আইনজীবীরা বেশকিছু যুক্তি তুলে ধরেন। আইনজীবী মুজিবর রহমান এসব যুক্তির বিষয় নিশ্চিত করেন সাংবাদিকদের। উল্লেখযোগ্য কিছু যুক্তি নিচে তুলে ধরা হলো।

প্রথম যুক্তিতে বলা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন। তাকে প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির শিকারে পরিণত করার উদ্যোগ হিসেবে ২০০৮ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার বিরুদ্ধে মামলার উদ্যোগ নেয়।

Advertisement

অথচ এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের ৩২ নম্বর সাক্ষী তদন্তদকারী কর্মকর্তার অনুসন্ধান প্রতিবেদনে মামলার করার মতো কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, তৎকালীন সেনাসমর্থিত সরকার সাধারণ নির্বাচন থেকে বিরত রাখার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করে।

অপর এক যুক্তিতে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখায় যে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছিল সে বিষয়ে আসামিপক্ষের দাখিলকৃত নথি বিচারিক আদালত বিবেচনায় না নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের তথাকথিত প্রদর্শিত নথি বিবেচনায় নিয়ে অপরিপক্বভাবে বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে।

আরও এক যুক্তিতে বলা হয়, বিচারিক আদালত কোনো ধরনের নথি এবং রেকর্ড ছাড়াই এবং কোনো কিছু বিবেচনা না করেই বে-আইনি এবং অযোক্তিকভাবে ড. কামাল সিদ্দিকীর দেয়া লিখিত চিঠি এবং সিডি গ্রহণ করেছেন।

একই সঙ্গে, ৩৪২ ধারার অধীনে আপিলকারী আসামির দেয়া গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস গ্রহণ না করে বিচারের অপরিপক্বতা প্রমাণিত হয়েছে। যুক্তিতে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ২২১, ২২২, ২২৩, ২৩৫ ও ২৩৯ ধারা লঙ্ঘন করে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

Advertisement

অ্যাকাউন্ট নিয়ে যুক্তিতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া নিজের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট খোলেন নাই। নিজে হিসাব পরিচালনা করবেন বা হালনাগাদ করবেন এ জাতীয় কোনো তথ্য নাই। খালেদা জিয়া স্বাক্ষরিত কোনো ফাইল বা চেক পাওয়া যায়নি। অর্থ স্থানান্তর সংক্রান্ত বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কোনো আদেশ-নির্দেশ অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা। এসব বিষয় আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপরও তার জবানবন্দি বিবেচনায় নিয়ে খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করে সাজা দেয়া হয়েছে।

যুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রথম অনুসন্ধান কর্মকর্তাকে অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর দ্বিতীয় অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগের যথাযথ কোনো কারণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপরও খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিয়ে যে রায় দেয়া হয়েছে তা বাতিলযোগ্য।

দশম যুক্তিতে বলা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়া এ সংক্রান্ত কোনো ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেননি। তিনি ট্রাস্টিও নন এবং তিনি কোনোভাবেই ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণ করেননি।

এফএইচ/বিএ