খেলাধুলা

ব্রাজিল ক্যাম্প করবে সোচিতে, আর্জেন্টিনা ব্রোনিতসিতে

এ যেন এক মহাযুদ্ধ। সারা বিশ্বের বাছাই করা ৩২টি জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যে একটি মাত্র ট্রফি জয়ের লড়াই। বিশ্বকাপ নামেই সবার কাছে পরিচয়; কিন্তু এই একটি সোনালি ট্রফির আহ্বানে সারাবিশ্বে যে যুদ্ধের যে সাজ সাজ রব পড়ে যায়, তাকে মহাযুদ্ধ না বলে কী আর উপায় আছে? কে কার বিরুদ্ধে, কোথায় লড়াই করবে তার সবই ঠিক করা। সূচি নির্ধারিত। এখন শুধু অপেক্ষার পালা সেই নির্ধারিত সময়ের উপস্থিতি। তবেই যুদ্ধ পরিচালনাকারী রেফারির মুখে বেজে উঠবে কিক অফের বাঁশি।

Advertisement

যুদ্ধ শুরুর আগে স্বাগতিক রাশিয়ায় গিয়ে আবহাওয়া এবং পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে না! প্রস্তুতিরও তো প্রয়োজন আছে। সুতরাং, রণ দামামা বেজে ওঠার অনেক আগেই রাশিয়া গিয়ে নানা স্থানে বেজ ক্যাম্প করতে বসে যাবে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো। তবে, যে যার ইচ্ছামত বেজ ক্যাম্প করার উপায় নেই।

গ্রুপ এবং সেই গ্রুপের ভেন্যু অনুসারে তার কাছাকাছি প্রতিটি দলের বেজ ক্যাম্পের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে আয়োজক কমিটি এবং ফিফা। সে হিসেবেই ডি গ্রুপে থাকা আর্জেন্টিনার বেজ ক্যাম্প থাকছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একেবারে কাছাকাছি, ব্রোনিতসিতে। আর ৫ বারের বিশ্বজয়ী ব্রাজিল বেজ ক্যাম্প করবে কৃষ্ণ সাগরের কাছাকাছি শহর সোচিতে।

ফিফার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রতিটি দলের বেজ ক্যাম্প (টিবিসি, টিম বেজ ক্যাম্প) এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে অন্তত গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোর ভেন্যু সেই দলের জন্য কাছাকাছি হয়। আবার বেজ ক্যাম্পের স্থান নির্ধারণে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে হোটেল ও ট্রেনিং সেন্টারের দুরত্ব খুব কাছাকাছি রেখে। এছাড়া প্রতিটি বেজ ক্যাম্প থেকে এয়ারপোর্টের দুরত্ব রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টার সড়কপথ।

Advertisement

প্রতিটি টিবিসি হবে টুর্নামেন্ট চলাকালীন সংশ্লিষ্ট সেই দলের হেড কোয়ার্টার, অন্তত গ্রুপ পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত। প্রতিটি টিবিসিতেই থাকছে টিম হোটেল এবং একটি করে ট্রেনিং সেন্টার। দুটোরই দুরত্ব রাখা হয়েছে খুব কম। গ্রুপ পর্বের ম্যাচের সময় অবশ্যই প্রতিটি দলকে সেই টিবিসির টিম হোটেলে থাকতে হবে এবং নির্ধারিত ট্রেনিং সেন্টারে অনুশীলন করতে হবে। ম্যাচের ভেন্যুতে যেতে হবে টিবিসির টিম হোটেল থেকে।

গ্রুপ পর্বের পর যারা পরবর্তী রাউন্ডে উঠবে তাদের জন্য অপশন থাকবে পূর্বের টিবিসিতে থাকার কিংবা নতুন কোথাও যাওয়ার। সেটা নির্ধারণ হবে মূলতঃ কোথায় তাদের ম্যাচ পড়ছে তার ওপর। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচের অন্তত ৫দিন আগে টিম বেজ ক্যাম্পে এসে উঠবে প্রতিটি দল।

ডি গ্রুপে খেলবে আর্জেন্টিনা। তাদের সঙ্গী আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া এবং নাইজেরিয়া। মস্কো, কালিনিংগ্রাদ, নিঝনি নভগরদ, ভলগোগ্রাদ, সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং রোস্তভ অন ডনে খেলবে ডি গ্রুপের দলগুলো। এ কারণে, মস্কো অঞ্চলেই আর্জেন্টিনার টিম বেজ ক্যাম্প নির্ধারণ করা হয়েছে। বলতে গেলে মস্কোর উপকণ্ঠেই ব্রোনিতসি। রাশিয়া রাজধানী মস্কো থেকে ৫৪.৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই শহর। মেসিদের টিম হোটেলের নাম ট্রেইনিং বেজ ব্রোনিতসি। আর অনুশীলনের জন্য নির্ধারিত মাঠের নাম ট্রেনিং সাইট অ্যাট স্টেডিয়াম অব সিরোইয়েজকিন স্পোর্টস স্কুল।

‘ই’ গ্রুপে রয়েছে ব্রাজিল। বাকি তিন প্রতিপক্ষ হচ্ছে সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকা এবং সার্বিয়া। খেলার ভেন্যু সামারা, রোস্তভ অন-ডন, সেন্ট পিটার্সবার্গ, কালিলিনগ্রাদ, মস্কো এবং নিঝনি নভগরদ। সব কিছু বিবেচনায় সোচিতেই ব্রাজিলের ক্যাম্পের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে আয়োজকরা। ব্রাজিলের টিম হোটেলের নাম সিয়োসোটেল রিসোর্ট সোচি কামেলিয়া। আর ট্রেনিং সেন্টারের নাম হচ্ছে, ইয়োগ স্পোর্ট স্টেডিয়াম।

Advertisement

বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানির টিম বেজ ক্যাম্পের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে মস্কোকে। এফ গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ মেক্সিকো, সুইডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়া। জার্মানির টিম হোটেলের নাম ভাতুতিঙ্কি হোটেল এবং ট্রেনিং সেন্টারের নাম সিএসকেএ স্পোর্টস বেজ। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দল পর্তুগালের মস্কো অঞ্চলের সাতুরন ট্রেইনিং বেজে হবে টিম বেজ ক্যাম্প। সাতুরন ট্রেইনিং বেজেই হবে তাদের অনুশীলন। স্পেনের টিবিসি হচ্ছে ক্রাসনোদরে। টিম হোটেল এফসি ক্রাসনোদর একাডেমি। ট্রেনিং সেন্টারও এফসি ক্রাসনোদর একাডেমি।

বিশ্বকাপের আরেক শিরোপা প্রত্যাশি ফ্রান্সের টিম বেজ ক্যাম্প মস্কো অঞ্চলেই। টিম হোটেলের নাম হিলটন গার্ডেন ইন মস্কো নিউ রিগা। ট্রেনিং সেন্টার হচ্ছে গ্লেবোভেটস স্টেডিয়াম।

আইএইচএস/আইআই