ক্যাম্পাস

জাবিতে জামার হাতা গুটিয়ে রাখায় জুনিয়রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত হওয়ার নামে বেধড়ক পেটুনির শিকার হয়েছেন ৪৭তম আবর্তনের এক নবীন শিক্ষার্থী। জামার হাতা গোটানো থাকার অভিযোগ এনে তাকে বেধড়ক পেটান আল বেরুনী হলে ৪৬তম আবর্তনের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থী।

Advertisement

গতকাল সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট’-এর ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান ক্লাস করতে গেলে তাকে ওই অভিযোগ এনে পেটান সিনিয়র শিক্ষার্থীরা।

আশিকুর রহমানের সহপাঠী অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রোমান সূত্রে জানা যায়, ওই সিনিয়ররা নিজেদের পরিচয় না দিয়ে আশিকুর এবং তার সঙ্গে থাকা বন্ধুকে ডেকে নিয়ে আল বেরুনি হলের সামনে পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেয়ার পদ্ধতি পছন্দ না হওয়ায় শুরু করেন ধমকাধমকি। এরপর আশিকুরের কাছে জানতে চান শার্টের হাতা গোটানো কেন। (ক্যাম্পাসে নবীন শিক্ষার্থীদের জামার হাতা গুটিয়ে রাখার সদ্য সিনিয়রদের নির্ধারণ করে দেয়া এক অলিখিত নিয়ম)।

জবাবে আশিকুর জানায়, জামার হাতা গুটিয়ে রাখা যে যাবে না, তা হলের বড় ভাইয়ারা বলেননি। জবাব শুনে শুরু হয় গালিগালাজ। গালিগালাজ না করতে আশিকুর রহমান অনুরোধ করলে শুরু হয় মারপিট।

Advertisement

চিকিৎসকের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরাসরি কথা বলা যায়নি আশিকুরের সঙ্গে। তবে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্রাম নিচ্ছেন আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের আবাসিক ছাত্র আশিকুর। তার নাকে রক্তের দাগ, চোখেও ফুটে রয়েছে রক্ত।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, আশিকুরকে প্রথমে মারতে শুরু করেন পাবলিক হেলথ বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জোবায়েদ আশিক। তার সঙ্গে যোগ দেন সজীব আহমেদ রাজ, শাহরিয়ার শরীফসহ আরও কয়েকজন। থাপ্পর মারতে মারতে আশিকুরকে কাছে থাকা পুকুরে ফেলে রেখে যান তারা। পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে পাঠান আশিকুরকে।

মারধরের ঘটনা সত্য কি না- জানতে চাইলে জোবায়েদ আশিক বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। আমাদের হলে তিনজন আশিক আছে। সবাই আমাকে ফোন দিচ্ছে কেন? একথা বলে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি তার সঙ্গে।

সজীব আহমেদ রাজ বলেন, আমি মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছি। এ ব্যাপারে কিছু জানি না। শাহরিয়ার শরীফের নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

Advertisement

প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, আমরা তাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছি। জামার হাতা গুটিয়ে রাখায় মারধর করা হয়েছে বলে জেনেছি। বলেছি লিখিত অভিযোগ দিতে। অভিযোগ পেলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রক্টর আরও জানান, সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। ডাক্তার জানিয়েছেন ইন্টারনাল কোনো হ্যামারেজ হয়নি।

কামাল উদ্দিন হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলাকারনাইন বলেন, আমরা বিষয়টি প্রক্টরকে জানিয়েছি। বলেছি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে।

হাফিজুর রহমান/এমএএস/এমএস