চেলসি বনাম বার্সেলোনা মানেই সেই না সমাধান হওয়া রহস্যটা ফিরে আসে বারবার। লিওনেল মেসিকে কী করে আটকে রাখল চেলসি? আটটা ম্যাচ খেলার পরও মেসির কোনও গোল নেই চেলসির বিরুদ্ধে।
Advertisement
কোনও দলের বিরুদ্ধে চারটি ম্যাচ খেলেছেন, অথচ গোল করেননি- এ রকম হয়নি মেসির। তাহলে চেলসি কী এমন জাদু করে রেখেছে বিশ্ব সেরা তারকাকে? জন টেরির ভক্তরা মনে করেন, ফ্যাক্টরটা আসলে ছিলেন টেরিই। মেসি চেলসির বিরুদ্ধে যখন খেলেছেন, তখন চেলসির ডিফেন্স পাহারা দিতেন টেরি।
সাবেক চেলসি অধিনায়ককে টপকে কোনোদিন গোল করতে পারেননি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। এমনকি যে মৌসুমে সব টুর্নামেন্ট মিলে ৭৩টি গোল করেছিলেন মেসি, সেই ২০১১-১২ মৌসুমেও নয়। ঘটনাচক্রে সেবারই শেষবার চেলসি-বার্সেলোনা সাক্ষাৎ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। সেবারই বার্সাকে ছিটকে দেওয়ার পর ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চেলসি।
মেসির বিরুদ্ধে পুরোনো রেকর্ড মাথায় রেখেই হয়তো আত্মবিশ্বাস জড়ো করছেন চেলসি কোচ আন্তনিও কন্তে। বার্সার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সরাসরি বলেই দিয়েছেন, ‘আমরা মেসিকে আটকানোর এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে আশাবাদী। আমি জানি, যে প্লেয়ার সম্পর্কে কথা বলছি, সে দুর্দান্ত ফুটবলার। আমাদের ওর প্রতি যথেষ্ট সম্মান রাখা উচিত।’
Advertisement
মেসিকে সম্মান রেখে কন্তের আরও সংযোজন, ‘বিশ্বের সেরা ফুটবলারকে আটকাতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনও একজন ফুটবলারকে দিয়ে মার্ক করিয়ে নয়। কারণ, আমরা মনে করি, মেসিকে ম্যান মার্কিং করে আটকানো ভয়ঙ্কর হয়ে যেতে পারে।’
চেলসির ইডেন হ্যাজার্ডের সামনেও এই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদে আসতে হলে অথবা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে হলে এই সুযোগটা কাজে লাগাতেই হবে বেলজিয়ান তারকাকে।
পুরোনো সতীর্থ, বন্ধুদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মাঠে নামতে হবে সেস ফ্যাব্রেগাসকেও। যিনি কিছুটা নস্টালজিক, ‘ওখানে আমার এমন কিছু বন্ধু আছে, যাদের সঙ্গে ১৩ বছর বয়স থেকে খেলেছি।’
তবে তার সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘কিন্তু মাঠে ওরা জেতার চেষ্টা করবে। আবার আমরাও ওদের হারানোর চেষ্টা করব। ফুটবল এ রকমই দারুণ খেলা। প্রতিপক্ষে খেললে সবকিছু পাল্টে যায়।’ নিজের দলকে তার পরামর্শ, ‘আমরা যদি ম্যাচের শুরুর দিকের চাপ কাটিয়ে দিতে পারি তাহলে আমাদের সামনেও সুযোগ আসবে। ওরা ডিফেন্সে অনেক সময় জায়গা ফাঁকা রেখে দেয়। সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।’
Advertisement
বার্সেলোনার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে নামার আগে চেলসির ইতিবাচক দিক বলতে এই পুরোনো পরিসংখ্যানই। সঙ্গে বলা যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সাক্ষাতে চেলসির ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা। সাম্প্রতিক ফর্মের দিকে নজর দিলেই বেরিয়ে পড়বে কন্তের দলের কঙ্কাল। চলতি মৌসুমে অদ্ভূত ভাবে ধারাবাহিকতার আশপাশ দিয়েও যাচ্ছে না প্রিমিয়ার লিগে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
বোর্নমাউথের কাছেও ৩ গোল হজম করতে হয়েছে চেলসিকে। প্রিমিয়ার লিগে অল্প সময়ের জন্য দু’নম্বরে উঠলেও ফের তারা নেমে গিয়েছে চার নম্বরে। তবু বার্সেলোনাকে আটকাতে আশায় ভাসছেন কন্তে। তার কথায়, ‘একদিক থেকে এই দল বিশ্বের অন্যতম সেরা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার দাবিদার। আবার অন্য দিক থেকে আমাদের উত্তেজিত থাকা উচিত এ রকম একটা বড় ম্যাচ খেলার জন্য। সবাইকে দেখানোর সুযোগ, আমাদের স্থান কোথায়।’
তার দল এই চ্যালেঞ্জ কী ভাবে নেয়, সেটাই দেখার অপেক্ষায় ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। ভালবার্দের দল লা লিগায় ধরাছোঁয়ার বাইরে প্রায়। মৌসুমে এখনও হারেনি কোনও টুর্নামেন্টে।
আইএইচএস/আইআই