কাজী আরেফ হত্যা কোনো আকস্মিক ঘটনা ছিল না, এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারা এ হত্যার বেনিফিসিয়ারি (লাভবান) তাদের মাঝে খুঁজলেই আরেফ হত্যার পরিকল্পনাকারীদের পাওয়া যাবে।
Advertisement
সোমবার ঢাকার শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ‘নিউক্লিয়াস থেকে গণআদালত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলে তার হত্যায় কারা লাভবান হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করার দাবি জানান।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী আরেফ আহমেদের অষ্টাদশ শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়। সভায় কাজী মফিজুর রহমান খান, সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আবেদ খান তার বক্তব্যে বলেন, কাজী আরেফ স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের উদ্যোক্তা ছিলেন। সেই নিউক্লিয়াসের আদর্শ ও পথ ধরে শোষণমুক্ত শক্তিশালী দেশ গড়তে ছাত্র-যুব-নারী সমাজকে এগিয়ে যেতে হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, আমার ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন কাজী আরেফ। এমন ত্যাগী নেতা আর আসবে কি না সন্দেহ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একটি সভা চলার সময় ব্রাশ ফায়ারে জাতীয় সমাজতান্দ্রিক দলের (জাসদ) পাঁচ নেতা নিহত হন।
এতে কাজী আরেফ আহমেদ ছাড়াও নিহত হন তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরায়েল হোসেন এবং শমসের মণ্ডল। ওই হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পর ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট ১০ জনের ফাঁসি এবং ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন কুষ্টিয়া জেলা জজ।
তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হলে ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট নয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন, একজনকে খালাস দেন এবং ১২ জনের সাজা মওকুফ করেন।
Advertisement
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেই আদেশ দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের রিভিউ আবেদনও খারিজ করে দেয়া হয়। পরে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলেও তা নাকচ করে দেয়া হয়।
এরপর ২০১৬ সালে ৮ জানুয়ারি ৩ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নয়জনের মধ্যে পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। আর একজন কারাগারে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন।
আরএম/জেডএ/এমএস