পোশাক শিল্প বিকাশের শুরু থেকেই নারী শ্রমিকের প্রাধান্য রয়েছে। এ শিল্পের কমবেশি ৪০ লাখ শ্রমিকের মধ্যে ২৬ লাখই নারী। তবে এত সংখ্যক নারী শ্রমিকদের মধ্যে গত ৩০ বছরেও নেতৃত্বের বিকাশ হয়নি। সরাসরি উৎপাদনের বাইরে নেতৃত্বশীল পদে নারী শ্রমিক নেই বললেই চলে। মাত্র ৪ শতাংশ নারী কিছুটা বড় পদ সুপারভাইজার এবং সমসংখ্যক লাইন চিফ হিসেবে কাজ করেন। বাকিরা সাধারণ শ্রমিক পদেই কাজ করছেন।
Advertisement
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) আয়োজিত বার্ষিক অর্থনীতিবিদ সম্মেলনের রোববার সমাপনী দিনের প্রথম অধিবেশনের আলোচনায় এসব বিষয় ওঠে এসেছে।
এছাড়া সচেতনতার অভাব, মধ্য ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির অনাগ্রহ আর ক্ষমতাসীনদের মর্জিরের বাইরে কথা বলার সুযোগ না থাকায় আলোচনার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না বলেও মত দেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সানেমের তৃতীয় অর্থনীতিবিদ সম্মেলন রোববার শেষ হয়েছে। শেষ দিনে নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া সেশনে সভাপতিত্ব করেন ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের (আইজিসি) কান্ট্রিডিরেক্টর ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. সুলতান হাফিজ রহমান। সেশনের দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অতনু রব্বানী ও স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেরেনা কোচিওলো।
Advertisement
উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিয়ে গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অধ্যাপক রওনাক জাহান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম। এ পর্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. মির্জা এম হাসান।
ড. রওনাক জাহান বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নমূলক আলোচনায় দরিদ্র নারীদের ভূমিকা এনজিও নির্ভর। এসব এনজিও অর্থায়নের জন্য নির্ভর করে বিদেশি সংস্থার ওপর। এ সহায়তা কত দিন কী পরিমাণে পাওয়া যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। টেকসই অর্থায়নের অভাবে এসব কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
তৈরি পোশাক শিল্পের ১০০ প্রতিষ্ঠানে সমীক্ষা চালিয়ে ড. অতনু রব্বানীর প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রায় ১২ শতাংশ ভূমিকা রাখছে পোশাক শিল্প। এ শিল্পের হাত ধরে আসছে রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি অর্থ। তবে এ শিল্পে নারী শ্রমিকদের প্রাধান্য থাকলেও নেতৃত্বে তাদের ভূমিকা সামান্য।
গবেষণা পত্রের সুপারিশ অংশে বলা হয়, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে তারা নেতৃত্বশীল পদের জন্য প্রস্তুত হবে। শ্রমিকদের ঝরে পড়ার হার কমবে। প্রশিক্ষণে মালিক কর্তৃপক্ষের কিছু বেশি ব্যয় হলেও শেষ পর্যন্ত তারাই লাভবান হবেন। কারণ, এতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
Advertisement
এমইউএইচ/আরএস/জেআইএম