আইন-আদালত

অনিয়ম দূর করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি : প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, 'অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি কবে সুপ্রিম কোর্টের অনিয়ম দূর করতে পারবো।' রোববার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে প্রয়াত রাজনীতিবিদ ও প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার শওকত আলী খানের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

Advertisement

প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এ প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে কথা বললেন তিনি। শওকত আলী খান অ্যাসোসিয়েট এ স্মরণসভার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টে যত অনিয়ম আছে তা সম্মিলিতভাবে দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। একইসঙ্গে কোর্টের যত অনিয়ম আছে তা বার সভাপতির কাছ থেকে লিখিতভাবে পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে আছেন বলেও জানান।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘শওকত আলী খান সাহেবের এ স্মরণসভা সফল হবে এবং কার্যকর হবে যদি আমরা এ কোর্টের যত অনিয়ম আছে এগুলো সম্মিলিতভাবে দূর করতে পারি।’

Advertisement

ব্যারিস্টার শওকত আলী খান এ কোর্টের জন্য কারাবরণ করেছেন উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্মানিত সভাপতি সাহেব উনি যেদিন ফরমালি আমার সঙ্গে দেখা করেছেন, আমি বললাম যে, কোর্টের কোথায় কী অনিয়ম আছে সেটা আপনি বলেন। উনি বললেন, এখনতো আপনাকে বলা যাবে আমি লিখিত দেব। আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি কবে সেই লিখিত বক্তব্য পাবো বারের তরফ থেকে’।

ব্যারিস্টার শওকত আলী খানের নাতি ব্যারিস্টার রেহান হোসেনের সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট আসমা আক্তারের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমির উল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা ব্যারিস্টার শওকত আলী খানের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তারা শওকত আলী খানের মতো আদর্শ আইনজীবী হওয়ার জন্য আইনজীবীদের আহ্বান জানান।

সিনিয়র আইনজীবী ড. কামাল হোসেন বলেন, 'শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও মওলানা ভাসানীকে দেশের মানুষ স্মরণ করেন, কেননা তারা মানুষের জন্য, সবার অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাই নবীন আইনজীবীদের শুধুমাত্র আদালতের কাজ নয় মানুষের বৈষম্য এবং অধিকার নিয়ে কাজ করতে হবে।'

Advertisement

উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার শওকত আলী খান ১৯২৬ সালে টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার থানার লাউহাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এম আরফান খানের দ্বিতীয় পুত্র ছিলেন। তার শৈশব এবং কৈশোরের কিছু সময় রেঙ্গুন (মিয়ানমার), কলকাতা ও ঢাকা শহরে কাটান।

ব্যারিস্টার শওকত ১৯৫৭ সাল থেকে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। তিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। একই সঙ্গে সংবিধান প্রণেতা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সেইসঙ্গে আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৭২ সালে তিনি টাঙ্গাইলের নাগপুর এবং মির্জাপুরের সংসদ সদস্য ছিলেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ২০০৬ সালের ২৯ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এফএইচ/এসএইচএস/জেআইএম