ধর্ম

বেহেশত-দোজখ সম্পর্কে কায়রোর কাজী ও ইয়াহুদির কথোপকথন

মানুষের দুনিয়া ও পরকালীন জীবনের অবস্থার বর্ণনা করতে গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, দুনিয়া মুমিনের জেলখানা আর অবিশ্বাসীদের জন্য বেহেশখানা। এ হাদিসটি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করছেন।

Advertisement

এ হাদিস সম্পর্কে কায়রোর এক ইয়াহুদি বিচারপতি হজরত হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানিকে প্রশ্ন করে বসেন। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি মজার ও শিক্ষনীয় ঘটনা। আর তাহলো-

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি কায়রোর প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন সময়ে একদিন তিনি এক ইয়াহুদির তেলের কারখানার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ঐ সময় ইয়াহুদি ক্লান্ত-শ্রান্ত দেহে তেলের কারখানায় কাজ করছিল।

প্রধান বিচারপতিকে দেখে ইয়াহুদি এগিয়ে এসে ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে বললেন, ‘আমার একটি প্রশ্ন আছে। আপনাকে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

Advertisement

ইয়াহুদির প্রশ্নটি হলো

‘এ পৃথিবী মুমিন মুসলমানদের জন্য দোজখ আর অবিশ্বাসীদের জন্য বেহেশত’ আপনাদের রাসুলের এ কথাটি কি সত্য?

কায়রোর প্রধান বিচারপতি হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন– হ্যাঁ তিনি সত্যই তা বলেছেন।

তখন ইয়াহুদি বলল, যদি তাই হয় তাহলে আপনি বলুন, আপনি এখন কোন দোযখে আছেন এবং আমি কোন বেহেশতে আছি?

Advertisement

ইবনে হাজার আসকালানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি উত্তর

‘আল্লাহ তাআলা মুমিনদের জন্য বেহেশতে যে নিয়ামত ও অফুরন্ত সুখ-শান্তি রেখেছেন, তার তুলনায় এ দুনিয়ার জীবন বিষাদময়, দোজখ-স্বরূপ। আর অবিশ্বাসীদের জন্য পরকালীন জীবনে দোজখের যে ভয়াবহ শাস্তি এবং দুর্বিষহ জবীন রয়েছে, তার তুলনায় এ পৃথিবী তাদের জন্য বেহেশত-স্বরূপ।’প্রধান বিচারপতির উত্তরের সঙ্গে সঙ্গে ইয়াহুদি লোকটি বললো, ‘আমি আজই (এখনই) ইসলাম গ্রহণ করব, আমাকে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় দিন। (আল্লাহু আকবার)

সুতরাং দুনিয়ার সামান্য চাকচিক্য ও স্বল্প সুখের নেশায় মত্ত না হয়ে পরকালের সীমাহীন জীবনের সুখ-শান্তি লাভে আল্লাহ তাআলা হুকুম-আহকাম পালন করা আবশ্যক কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ায় কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন-যাপন করে পরকালের পাথেয় ও আল্লাহর দিদার লাভের তাওফিক দান করুন। চিরস্থায়ী জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল কুরুন। আমিন।

এমএমএস/আইআই