ভ্রমণ

পর্যটকদের মায়া ছড়াচ্ছে ‘মায়াবিনী’

পাহাড়ের উঁচু-নিচু ভাঁজে ভাঁজে বাঁধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে লেক। স্বর্গময় লেকের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলছে হাঁস। স্বচ্ছ জলে খেলা করছে মাছ। প্রশ্বস্ত লেকের স্বচ্ছ পানিতে নৌকায় বসে প্রকৃতি উপভোগ করছে নানা বয়সী লোকজন। এমনই পরিবেশে খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটকদের মায়া ছড়াচ্ছে ‘মায়াবিনী লেক’।

Advertisement

খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ২০ মিনিটের পথ পেরিয়ে দেখা মিলবে বিনোদন কেন্দ্র ‘মায়াবিনী লেক’র। প্রবেশ পথেই দৃষ্টিনন্দন অভিবাদন গেইট বলে দিচ্ছে পর্যটনের সম্ভাবনার কথা। পাহাড়ের উঁচু-নিচু ৪০ একর জমির ওপর ১৫ একর লেকে দ্বীপ বেষ্টিত মায়াবিনী লেক খাগড়াছড়িতে পর্যটনের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করবে।

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লতিবান ইউনিয়নের কংচাইরী পাড়ার বিনোদন কেন্দ্র ‘মায়াবিনী লেক’ ঘিরে আগ্রহ বেড়েছে পর্যটকদের এমনটাই জানিয়েছে অংহ্লাপ্রু মারমা। তিনি বলেন, ‘একতা মৎস্য সমবায় সমিতির স্বপ্নের নাম ‘মায়াবিনী লেক’। ২৮ সদস্যের একতা মৎস্য সমবায় সমিতির হাত ধরেই এখানে তৈরি হয়েছে বিনোদন কেন্দ্র।’

মায়াবিনী লেকের স্বচ্ছ পানির প্রবাহমান ধারা মুগ্ধ করবে সব বয়সী ভ্রমণপিপাসু বিনোদনপ্রেমীর। দ্বীপের মধ্যে আছে বিশ্রামাগার। ভ্রমণ সুবিধার জন্য লেকে রয়েছে চারটি নৌকা। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে পারিবারিক ভ্রমণের জন্য চমৎকার মায়াবিনী লেক। নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্য ‘মায়াবিনী লেক’ হতে পারে উপযুক্ত পর্যটন কেন্দ্র। আগত পর্যটকদের সুবিধার জন্য পর্যায়ক্রমে মায়াবিনী লেকে নৌকার জায়গায় ‘স্পিড বোট’ যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের।

Advertisement

চাঁদপুর থেকে স্বপরিবারে মায়াবিনী লেকে ঘুরতে আসা আবদুল্লাহ আল রাকিব বলেন, ‘শহরের খুব কাছাকাছি এমন নয়নাভিরাম পর্যটন কেন্দ্র যেকোনো পর্যটকেরই দৃষ্টি কাড়বে। স্বচ্ছ জলে হাঁস ও মাছের খেলা দেখার জন্য উপযুক্ত জায়গা মায়াবিনী লেক।’

উপজেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের কথা জানিয়ে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, ‘পর্যটকদের সুবিধার্থে লেকজুড়ে সড়ক ও গোল ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।’ ভবিষ্যতেও সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয়রা কমিউনিটি ট্যুরিজমের মাধ্যমে ‘মায়াবিনী লেক’ পরিচালনা করছে জানিয়ে খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম কাওছার হোসেন বলেন, ‘পর্যটকরা নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে মায়াবিনী লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করছে। ভ্রমণ পিপাসা মেটাতেও সক্ষম হচ্ছে আগত পর্যটকরা।’ ‘মায়াবিনী লেক’র মাধ্যমে কমিউনিটি ট্যুরিজম সম্প্রসারিত হবে বলেও মনে করেন তিনি। ভবিষ্যতেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিউনিটি ট্যুরিজমকে উৎসাহিত করবে বলেও জানান তিনি।

নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে ‘মায়াবিনী লেক’র কাছাকাছি ভাইবোনছড়াতে পানছড়ি রাবার ড্যাম, দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহত বৌদ্ধ ধর্মীয় উপসনালয় অরণ্য কুটিরসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের সুবিধা রয়েছে।

Advertisement

যেভাবে যাবেনঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে খাগড়াছড়িতে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে যেকোনো বাসে সরাসরি খাগড়াছড়ি শহরে নামতে হবে। খাগড়াছড়ি থেকে পানছড়িগামী সিএনজি অথবা মাহিন্দ্র পরিবহনে ভাইবোনছড়া বাজারে নেমে পশ্চিম দিকে পাঁচ মিনিটের পথ শেষেই স্বপ্নের ‘মায়াবিনী লেক’। এছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়িতে করেও যেতে পারবেন।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসইউ/এমএস