বাহুর পেশির সমস্যা মুক্ত হয়ে তামিম ইকবাল ফিরছেন শেষ টি-টোয়েন্টিতে। সিনিয়র পার্টনার ও এক ওপেনার সুস্থ হয়ে দলে ফেরত আসা মানেই তার বিকল্প হিসেবে আগের ম্যাচ খেলা জাকির হাসানের আবার বাইরে চলে যাওয়া।
Advertisement
এ তরুণ ঢাকায় প্রথম ম্যাচে রান পেলে হয়ত একাদশে থাকতে পারতেন; কিন্তু তা যেহেতু পাননি। তাই তার জায়গা ছেড়ে দেয়া ছাড়া আসলে পথ নেই। তরুণ হার্ডহিটার কাম উইকেটরক্ষক জাকিরকে তাই রোববার ড্রেসিং রুমে বসেই কাটাতে হবে।
শুধু কি ওই একটিই রদবদল হলে কথাই ছিল। জয়ের পথ খুঁজে পেতে মরিয়া টাইগারদের আগামীকালের টিম কম্বিনেশন কি হবে? সাত ব্যাটসম্যান, তিন পেসার আর দুই স্পিনার ফর্মুলাই কি বহাল থাকবে? নাকি পরিবর্তনের ছোয়া লাগবে?
ভক্ত-সমর্থকরা তা জানতেই উন্মুখ। আজ সিরেঠে প্র্যাকটিসের পর রাতেও একাদশ চূড়ান্ত করা হয়নি। কাল মাঠে গিয়ে উইকেট দেখেই ১১জন ঠিক করা হবে। এমন খবরই মিলেছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সংবাদ সম্মেলনেও এমন কথা বলে গেছেন।
Advertisement
তবে এটা নিশ্চিত যে ১১ জনই খেলুন না কেন, দলের গঠনশৈলি প্রথম ম্যাচের মতই থাকবে। অর্থাৎ কাল সিলেটে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টাইগারদের একাদশে তিন পেস বোলারের দেখাই মিলবে। সাথে দুই জেনুইন স্পিনার খেলানো হবে। যেহেতু একাদশ ঠিক হয়নি, কাল হবে। তাই দল নিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আর টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন আগাম কোন মন্তব্য করেননি।
তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রথম ম্যাচে অভিষেক হওয়া চার তরুণের দুজন হয়ত বাদ যাচ্ছেন কাল। আগেই জানা তামিম ফিরছেন। তাই জাকির এমনিতেই বাদ যাচ্ছেন। এর বাইরে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান কাম অফস্পিনার আফিফ হোসেন ধ্রুবকেও সম্ভবত ড্রপ করা হবে। তার বদলে অফ স্পিনার মেহেদিকে খেলানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, যেহেতু আফিফ প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও চরম ব্যর্থ হয়েছেন, তাই তাকে পরপর দুই ম্যাচ খেলানোর বিপক্ষে টিম ম্যানেজমেন্ট। কারণ অফ স্পিনার আফিফ জায়গামত বল ফেলতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রচুর শর্ট বলও করেছেন। তাই তার জায়গায় আরেক অফব্রেক বোলার মেহেদির খেলা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে আগের ম্যাচে জতীয় দলের হয়ে প্রথম খেলতে নামা চার তরুণের বাকি দু’জন নাজমুল অপু আর আরিফুল কালও একাদশে আছেন।
বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল অপু (প্রথম ম্যাচে চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট) স্পিনার কোটায় প্রথম সুযোগেই নিজেকে মেলে ধরেছেন। শতভাগ ব্যাটিং উইকেটে অন্য বোলাররা যেখানে বেদম মার খেয়েছেন, সেখানে বাঁ-হাতি নাজমুল অপু বুদ্ধি খাটিয়ে ভাল জায়গায় বল ফেলে রানের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি দুটি উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। তাই কালকের ম্যাচে বোলার ও স্পিনার কোটায় নাজমুল অপু ফার্স্ট চয়েজ। স্পিনার কোটায় তার সাথে সংযুক্ত হতে যাচ্ছেন বিপিএলে নজর কাড়া অফস্পিনার মেহেদি।
Advertisement
এ ছাড়া কাল আরও একজনের অভিষেকের সম্ভাবনা প্রচুর। তিনি পেস বোলার আবু জায়েদ রাহি। রুবেল হোসেনের জায়গায় রাহিকে খেলানোর চিন্তা চলছে। ভিতরের খবর, কাল লাল সবুজ জার্সি গায়ে হয়ত প্রথম নামতে যাচ্ছেন এ পেস বোলার। বলার অপেক্ষা রাখে না, রাহিও এবারের বিপিএলে দারুণ বোলিং করেছেন। এর বাইরে আরও একজনের দলে আসা এক রকম নিশ্চিত; তিনি মোহাম্মদ মিঠুন। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে দায়িত্বপূর্ণ ও বুদ্বিদীপ্ত ব্যাটিং করা মিঠুন সম্ভবত অফফর্ম সাব্বির রহমান রুম্মনের জায়গা নেবেন।
আগের ম্যাচে চরম ব্যর্থ সাব্বিরের একাদশে জায়গা পাবার সম্ভাবনা প্রায় শুন্যের কোঠায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও কারো কারো ধারনা, সাব্বিরের ওপর নাকি আরও আস্থা রাখতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট; কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অন্য কথা। সাব্বিরের ফর্ম ও মাঠে পদচারনায় যারপরনাই হতাশ টিম ম্যানেজমেন্ট। কাজেই তার কালকের ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আরিফুল আগের ম্যাচে মাত্র দুটি বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তাই তাকে বাদ দেয়ার কথা ভাবতে নারাজ টিম ম্যানেজমেন্ট।
এর বাইরে আর শুধু মাত্র সাইফউদ্দীনকে খেলানো নিয়েই খানিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে; কিন্তু ভেতরের খবর, এ পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে আরও একটি সুযোগ দেয়া হচ্ছে। যেহেতু তার ব্যাটিং আছে। তাই তাকে বাদ দিলে একটি অলরাউন্ডার অপশন কমে যায়। সে কারণেই প্রথম ম্যাচে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের হাতে নাকাল সাইফউদ্দীন কালও দলে থাকছেন।
তাহলে আসুন সম্ভাব্য একাদশ মিলিয়ে নিই...
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক, সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, আবু জায়েদ রাহি, নাজমুল অপু ও মেহেদি হাসান।
এআরবি/আইএইচএস/এমআরএম