দেশজুড়ে

দুইজন দুই ধর্মের, ভালোবাসা কাল হলো

মাস ছয়েক আগে প্রেম করে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী কান্তা বড়ুয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী টিপু দাসের। পারিবারিকভাবে প্রথম দিকে সমস্যার সম্মুখীন হলেও পরে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়।

Advertisement

পরে শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর সঙ্গে সংসার করছিলেন কান্তা। বিয়ের ছয় মাস পরে শ্বশুরবাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে তার ঝুলন্ত লাশ। শ্বশুরবাড়ির লোকদের দাবি আত্মহত্যা করেছেন কান্তা। তবে স্থানীয়রা বলছে, দুইজন দুই ধর্মের। প্রেমিককে বিয়ে করাই কাল হলো কান্তার।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের উত্তর ঘুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কান্তা ওই এলাকার নিটু বড়ুয়ার মেয়ে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী টিপু দাস ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী কান্তা বড়ুয়া প্রেম করে পালিয়ে ৬ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন।

স্থানীয়রা জানায়, ঘুনিয়ায় পাশাপাশি হিন্দু পাড়া ও বড়ুয়া পাড়া। সেখানের নিটু বড়ুয়ার মেয়ে কান্তা বড়ুয়ার সঙ্গে সুরেশ শুক্লা দাসের ছেলে টিপু দাসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

Advertisement

তবে তারা দুই ধর্মের হওয়ায় দুই পরিবারের কেউ ওই সম্পর্ক মেনে নিচ্ছিল না। কান্তা এইচএসসি পাস করার পর প্রেমিক টিপুকে গোপনে বিয়ে করে। পরে টিপুর পরিবার কান্তাকে মেনে নিলে শ্বশুরবাড়িতে কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন।

স্থানীয়রা আরও জানায়, বিয়ের আগে টিপু বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করবে বলে কথা দিয়েছিল কান্তাকে। কিন্তু বিয়ের পর সেই কথা না রাখায় সম্প্রতি স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কান্তার বাক-বিতণ্ড হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য অনিমেষ রঞ্জন বলেন, দুই গোত্রের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রেম করে বিয়ে হলেও তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া-বিবাদ তেমন ছিল না। হঠাৎ শুক্রবার সকালে কান্তা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পারি।

চকরিয়া থানা পুলিশের ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রেম করে বিয়ের ছয় মাস পর গৃহবধূ মারা যাওয়ায় নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। তাই মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

Advertisement

থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত চৌধুরী বলেন, নিহত কান্তার প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে মহিলা পুলিশ দিয়ে। এ সময় কান্তার হাত ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

সায়ীদ আলমগীর/এএম/জেআইএম