ফাগুন এসেছে তিন দিন আগে। বসন্ত বরণের পরের দিন ভালোবাসার আবেশে ডুবলো সবাই। ফাগুনের রঙ সেই যে লাগলো, আজ শুক্রবার বইমেলায় যেন তার পূর্ণতা মিলল।
Advertisement
শুক্রবার ছিল শুধুই বইমেলার। ছুটির দিনে মেলা প্রাঙ্গণ ভরে যায় বটে। তাই বলে এত মানুষ! মেলার ত্রি-সীমানায় কোথায় ফাঁকা ছিল, তার সন্ধান পাওয়াই দায় ছিল এদিন। পা ফেলার জো ছিল না। শুধুই মানুষ আর মানুষ।
শিশু প্রহরের জানান দিয়ে মেলার পর্দা ওঠে শুক্রবার। দুপুরে খানিক বিরতি ছিল। কিন্তু দুপুর না গড়াতেই বিরতির অপেক্ষা যেন আর কাটছিল না। যারা এসেছিলেন সকালে শিশুদের হাতে নিয়ে, তারাও কেউ কেউ থেকে যান বিকেলের মেলায়।
বিকেলের সেশন শুরু হতেই কানায় কানায় ভরে যায় মেলার সমস্ত আঙ্গিনা। ফাগুন বরণের প্রাণের দোলা আর ভালোবাসার হৃদয় নিয়ে সবাই যেন শুক্রবারের জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। অপেক্ষার অবসান ঘটল, সন্ধ্যার ঠিক আগেই। ততক্ষণে জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে প্রাণের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। মেলায় প্রবেশের সমস্ত পথে দীর্ঘ লাইন। সময় গড়িয়ে লাইন আরও দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। এমন অপেক্ষার মধ্যেই কোনো বিরক্তি ছিল না, ছিল না কোনো ক্লান্তি। নতুন বইয়ের গন্ধ পেয়েই সবাই যেন দূর করতে থাকে নিমিষে।
Advertisement
রংপুর থেকে ছোট বোন মুনকে সঙ্গে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন সপ্তাহ হলো। ফাগুনের প্রথম দিন আর ভালোবাসা দিবসে বের হননি ভিড় জেনে। গুলশান থেকে আজ এসেছেন বইমেলায়। ২০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে প্রবেশ করতে পেরেছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বলেন, আগের দু’দিন আসিনি ভিড় হবে বলে। আজ এসে আরও ভিড়ের কবলে পড়লাম। কোথাও দাঁড়াতেও পারছি না। ঘুরে ঘুরে বই কিনব, সে সুযোগ কই। তবুও ভালো লাগছে বইয়ের মানুষ দেখে। বই না হয় আরেক দিন কিনব।
সময় প্রকাশনীর মালিক ফরিদ আহমেদ। বলেন, ফাগুনের প্রথম দিন থেকেই তো মেলার রূপ বদলে গেল। আগের বছরেও তাই হয়। স্রোতের মতো পাঠক আসছে এখন। সবাই হয়ত বই কিনছেন না। তবে বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। আজ না কিনলেও, আগামীতে হয়ত কিনবেন।
মেলা পরিচালনা পরিষদের সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেন, মেলার মধ্য সময় পার হয়েছে। মেলার যে সত্যিকার রূপ, এখন তাই দেখা দিয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারির আগে আর শুক্রবার নেই। তাই বইপ্রেমীরা সবাই ছুটে এসেছেন আজ। তবে এই ধারা অব্যাহত থাকবে এ ক’দিন।
এএসএস/জেএইচ/আইআই
Advertisement