মতামত

বন্ধ হোক এই নৃংশসতা

১৯ বছর বয়সী এক কিশোরের গুলিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডের একটি স্কুলে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের হামলার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। মানবতাবাদী বিশ্বেও শোক বইছে।

Advertisement

স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যার দিকে মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। হামলার আগে হামলাকারী ফায়ার অ্যালার্ম বাজিয়ে দেন। হামলার খবর পয়ে পুলিশ ও সোয়াট টিম ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে। সন্দেহভাজন ১৯ বছর বয়সী ওই কিশোরের নাম নিকোলাস ক্রুজ এবং তিনি ওই বিদ্যালয়েরই সাবেক ছাত্র। তাকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ২০১২ সালে কানেক্টিকাটে একটি বিদ্যালয়ে গুলিতে ২৬ জন নিহত হওয়ার পর এটিই স্কুলে গোলাগুলিতে সবচেয়ে বড় নিহতের ঘটনা। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিদ্যালয়ে এবার দিয়ে ষষ্ঠবারের মতো এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটলো। আর ২০১৩ সাল থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ২৯১টি।

কেন হয় এমন হত্যাকাণ্ড? উন্নত প্রযুক্তির দ্রুতগতির অস্ত্রগুলোই এর জন্য দায়ী। এছাড়া দেশটির সহজ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনও এজন্য দায়ী। বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ নির্বিচার গুলির ঘটনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক নির্বিচার গুলির ঘটনায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদায় বেলায় ২০১৬ সালে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন, বারাক ওবামা। গান লবিস্টদের বাধার মুখে ৮ বছরেও কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন করতে না পারার ব্যর্থতা ছিলো তার কণ্ঠে। বেশ কয়েকবার অস্ত্র আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও, সিনেটের সমর্থন না পাওয়ায় প্রতিবারই তা ব্যর্থ হয়।

স্কুলে নৃশংস হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে ফের আলোচনায় নির্বিচার গুলিতে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির বিষয়টি। যুক্তরাষ্ট্রে অন্য আর দশটি পণ্যের মতই বিক্রি হয় অস্ত্র। বলা হয়, ৩১ কোটি মানুষের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র রয়েছে, ৩২ কোটি। গড়ে দিনে ৩৩ টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে দেশটিতে। সর্বশেষ এই ন্যক্কারজনক হামলার পর ব্যক্তি স্বাধীনতার দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আদৌ কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন সম্ভব কীনা, তা-ই এখন দেখার বিষয়। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। শোক সন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি রইলো গভীর সমবেদনা।

Advertisement

এইচআর/এমএস